কুমিল্লায় শুরু হওয়া বণিকবাড়ির পুজো এখন ময়নাগুড়ির দেবীনগরপাড়ায়
বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সোমনাথ চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি:
পঞ্চমীতে মনসাপুজো করে দুর্গাপুজো শুরু হয় ময়নাগুড়ির দেবীনগরপাড়ার বণিক বাড়িতে। এই পুজো একসময় বাংলাদেশের কুমিল্লায় হতো। প্রায় ১৮০ বছরের পুরানো এই পুজো ওপার বাংলা থেকে বণিকবাড়ির পূর্বপুরুষ নিয়ে আসেন পশ্চিমবঙ্গের কালীঘাটে। কোনও কারণে একবছর বন্ধ ছিল পুজো। সেবার স্বর্গীয় রাণুবালা বণিককে স্বপ্নাদেশে দর্শন দেন দুর্গা। রাণুবালা বণিককে আদেশ করেন এই পুজো তাঁর স্বামীরবাড়ি ময়নাগুড়িতে করতে। এরপর থেকে ময়নাগুড়ি শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীনগরপাড়ায় শুরু হয় পুজো। বণিক বাড়ির বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা জানিয়েছেন, ময়নাগুড়িতে প্রায় ৩৭ বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে।
বণিক বাড়ির দুর্গাপুজোয় পঞ্চমীতে যেমন মনসাপুজো হয় তেমনই অষ্টমীতে হয় কুমারীপুজো। অষ্টমীতেই হয় সন্ধিপুজো। রাতে হয় কালীপুজো। নবমীর বিকেল থেকে দরিদ্রনারায়ণ সেবা করানো হয়। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন করার পর নিয়ে আসা হয় কাঠামো। ওই রাতে নারায়ণ পুজো করা হয়। দুর্গার কাঠামো সারাবছর বণিক বাড়িতেই থাকে। দৈনিক ফুল-জল দিয়ে সেই কাঠামোর পুজো করা হয়। বছর ঘুরলেই রথের দিন কাঠামো পুজো করে বণিক বাড়িতেই শুরু হয় মায়ের প্রতিমা বানানোর কাজ।
জয়দেব বণিক, বাসুদেব বণিক, বুদ্ধদেব বণিক, সহদেব বণিক, ভক্ত বণিক, রিঙ্কু বণিক, সংগীতা বণিক, মৌসুমি বণিক, মাম্পি বণিক, মুনমুন বণিক, অমৃতা বণিক, দেবাঙ্কর বণিক, মৈনাক বণিক, দেবরাজ বণিক সহ বণিক বাড়ির সকল সদস্য পুজোর আগে বাড়িতে এসে পুজোর আয়োজন করে থাকেন। ভক্ত বণিক বলেন, আমাদের পুজো বাংলাদেশে হতো। আমাদেরই বংশধর এই পুজো কলকাতার কালীঘাটে নিয়ে এসেছিলেন। কোনও কারণে একবছর পুজো বন্ধ ছিল। ওই বছর আমার মাকে দেবী দুর্গা স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন তিনি যেন তাঁর স্বামীর বাড়িতে এই পুজো করেন। এরপর থেকে আমাদের বাড়িতে পুজো শুরু হয়। আমাদের পাড়ার প্রত্যেকে আনন্দে মেতে ওঠেন এই পুজোয়। প্রতিমা তৈরি করছেন নির্মল পাল। পুজোর ক’দিন রোজ ভোগের আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রতিবেশীরাও হাতে হাত মিলিয়ে সহযোগিতা করেন। নিজস্ব চিত্র