বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গে, সিকিমে ধসে মৃত তিন
বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, দার্জিলিং: ভয়াবহ ভূমিধসে বিধ্বস্ত সিকিম। বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিম সিকিমের আপার রিম্বিতে ধসে চাপা পড়েছে একটি বাড়ি। এতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। যারমধ্যে দু’জন পুরুষ এবং একজন মহিলা। আহত হয়েছে এক শিশু সহ তিনজন। এদিকে, পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে ফের ফুঁসছে তিস্তা ও জলঢাকা নদী। সংশ্লিষ্ট দু’টি নদীর একটির অসংরক্ষিত এলাকায় লাল এবং একটির সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সংকেত জারি করা হয়েছে। এই অবস্থায় উত্তরবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। পশ্চিম সিকিমের ইয়াংথাং নির্বাচনী এলাকার আপার রিম্বি গেইজিং জেলায় অবস্থিত। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। এতেই মধ্যরাতে একটি বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে। সিকিম সরকার জানিয়েছে, ধসে চাপা পড়ে ওই বাড়ির মালিক সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের নাম ভীমপ্রসাদ লিম্বু (৫২), বিমল রায় (৫০) ও অনিতা লিম্বু (৪৬)। ভীম বাড়ির মালিক। ভীমের স্ত্রী মনমায়া রায় ও সাত বছরের কন্যা অ্যাঞ্জেলা রায় আহত হয়েছেন। তাঁদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরবাইরে ঘটনাস্থল থেকে সুক বার্ডার লিম্বুকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে উদ্ধারকারী দল। স্থানীয় বিধায়ক ভীম হ্যাং লিম্বু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ক্ষয়ক্ষতির খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তিনি মৃতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানিয়েছেন। গেইজিংয়ের পুলিশ সুপার শেরিং শেরপা জানান, ওই ভূমিধসে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসী এবং এসএসবি’র সহায়তায় স্থানীয় নদীর উপর একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু তৈরি করে আহতদের উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে, সিকিম পাহাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় জলপাইগুড়িতে তিস্তা নদীতে জলস্তর বেড়েছে। ইতিমধ্যে মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সংকেত জারি করেছে সেচদপ্তর। একইসঙ্গে তারা জলপাইগুড়ির সাপ্টিবাড়ি থেকে মাথাভাঙা পর্যন্ত জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সংকেত জারি করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে উত্তরবঙ্গে আরও এক সপ্তাহ বৃষ্টি চলবে।
বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সিকিম কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলীয়বাষ্প প্রবেশ করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এর জেরে দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে ধস এবং নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলি প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা। উত্তরকন্যার বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের এক অফিসার জানান, বিষয়টি প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় কিউআর টিমগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।