নেপাল থেকে ফিরলেন বাঁকুড়ার ১০ জন পরিযায়ী শ্রমিক, স্বস্তি
বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: নেপাল থেকে ১০ জন পরিযায়ী শ্রমিক শুক্রবার বাঁকুড়ায় ফিরে এসেছেন। বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে হিমালয়ের কোলের দেশ থেকে বাড়িতে ফেরায় শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের লোকজন স্বস্তি পেয়েছেন। তবে তাঁদের মন থেকে এখনও আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি। ঘরে ফেরা শ্রমিকদের চোখে মুখে সেই আতঙ্কের ছাপ লক্ষ্য করা গিয়েছে। এদিন হীড়বাঁধের মলিয়ান অঞ্চলের লালবাজার গ্রামের সাতজন, সিমলাপালের লক্ষ্মীসাগর গ্রামের দু’জন ও বিষ্ণুপুরের একজন শ্রমিক বাড়ি ফিরেছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরের বীরগঞ্জ এলাকায় থাকতেন। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় থাকার ফলেই তাঁরা বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। হীড়বাঁধের মলিয়ান অঞ্চলেরই তিন শতাধিক শ্রমিক নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডু সহ সেদেশের বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত রয়েছেন। তাঁরা সেখানে কাঁসা-পিতলের বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করেন। তাঁদের মধ্য থেকেই দশজন এদিন জেলায় ফিরেছেন। হীড়বাঁধ ছাড়াও ইন্দপুর সহ বাঁকুড়ার অন্যান্য ব্লকের বেশকিছু বাসিন্দা নেপালে রয়েছেন। যদিও এব্যাপারে প্রশাসনের কাছে তেমন কোনও তথ্য নেই। ঘরে ফেরানোর ব্যাপারে সাহায্য চেয়ে শ্রমিক বা তাঁদের পরিবারের তরফে কেউ আবেদন করেনি বলে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। ফিরে আসা শ্রমিকদের মধ্যে সন্দীপ কর্মকার, রাজেশ কর্মকার বলেন, নেপালে অশান্তি শুরু হতেই আমাদের বাইরে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কারখানার কাজও স্থগিত রাখা হয়। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে কিছুক্ষণের জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছিল। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসামাত্র আমরা কর্মস্থল থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিই। প্রথমে গাড়ি রিজার্ভ করে ও পরে ৭-৮ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ভারতের সীমান্তে পৌঁছই। পরে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরি। তাঁরা আরও বলেন, ছাত্র ও যুবদের আন্দোলন শুরু হতেই আমরা কার্যত গৃহবন্দি হয়ে পড়ি। চাল, ডাল, সব্জি সহ জরুরি জিনিসপত্র কিনতেও বাইরে বের হওয়ার সাহস পাইনি। ফলে বাড়ি ফেরার সামান্য সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। তবে ফেরার পথে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা দফায় দফায় আমাদের পথ আটকে ছিলেন। ফের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার জন্য তাঁরা নির্দেশও দেন। সেনাকে অনেক বুঝিয়ে বলার পর আসতে পেরেছি। বাড়ি ফিরতে পেরে ভালো লাগছে। পরিবারের সঙ্গেই পুজো কাটাব। নেপালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেদেশে যাব না।