যাদবপুরে ছাত্রীমৃত্যু: অত রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলার অনুমতিই ছিল না, বলছেন সহ-উপাচার্য! মানলেন, নিরাপত্তারক্ষী কম
আনন্দবাজার | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ড্রামা ক্লাবের অনুষ্ঠান চলছিল বৃহস্পতিবার। রাতে চার নম্বর গেটের সামনের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলের দেহ। অনামিকা নিমতার বাসিন্দা। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হল, এখনও স্পষ্ট নয়। এর মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেনে নিলেন, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কম। তবে অত রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলার কথা নয় বলে জানালেন সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত। অনুষ্ঠান চলাকালীন এই ঘটনা ঘটেছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে অমিতাভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘রাতেই আমরা পুলিশকে ঘটনার কথা জানিয়েছিলাম। ছাত্রীকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া হয় কেপিসি-তে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। ওঁর পরিবার রাতে এসেছিল। হাসপাতালে আমরা অনেকে ছিলাম। ইংরেজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছিলাম। আমরা সমব্যথী।’’ রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে অমিতাভ বলেন, ‘‘আমাদের ড্রামা ক্লাবের অনুষ্ঠান ছিল। তার জন্য যে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন, নিশ্চয়ই নেওয়া হয়েছিল।’’ রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠানের অনুমতি ছিল কি? সহ-উপাচার্য বলেন, ‘‘না, রাত পর্যন্ত ছিল না। তবে অনেক সময় নানা কারণে নির্ধারিত সময়ের বাইরেও অনুষ্ঠান চালানোর প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে কত রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলেছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য এখনও আমার কাছে আসেনি। ঘটনাটি কখন ঘটেছে, তখন অনুষ্ঠান চলছিল কি না, জানি না।’’
নিরাপত্তারক্ষীরা কি ক্যাম্পাসে নজরদারি চালান? অমিতাভ জানান, নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এত বড় ক্যাম্পাস। গত কয়েক বছরে অনেক নিরাপত্তারক্ষী অবসর নিয়েছেন। ফলে এখন কিছুটা ঘাটতি আছে। সীমিত নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে। ক্যাম্পাসে নজরদারি নিশ্চয়ই থাকে। তবে পেট্রলিং টিম হয়তো সেই সময় ওই জায়গায় ছিল না। আমরা কথা বলছি। ভবিষ্যতে আর যাতে এই ধরনের ঘটনা না-ঘটে, তা দেখব। আশা রাখছি, উপাচার্য শীঘ্রই আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেটের সামনে তিনটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে যে পুকুর থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার দিকে মুখ করে আদৌ কোনও ক্যামেরা নেই। কী ভাবে ছাত্রী পুকুরে পড়লেন, এখনও তা স্পষ্ট হয়নি। যাদবপুর থানার পুলিশ আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ছাত্রীর দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেছে পুলিশ। সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। শুক্রবার সকালে ছাত্রীর বাবা থানায় গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পরিবারের তরফে এখনও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।