মাসকুলার ডিসট্রফি রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে অবশেষে দু’টি ‘পলিসোমনোগ্রাফি মেশিন’ (ঘুমের প্রকৃতি বিশ্লেষণকারী যন্ত্র) কিনেছে রাজ্য সরকার। মাস্কুলার ডিসট্রফি রোগীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের কৌঁসুলি। প্রসঙ্গত, এই যন্ত্র কিনতে গড়িমসি নিয়ে আগের শুনানিতে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম। রাজ্য পুজোয় কয়েকশো কোটি টাকা অনুদান দিলেও কেন কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে এই যন্ত্র কিনছে না, সেই প্রশ্নও করেছিলেন তিনি।
এ দিন রাজ্যের কৌঁসুলি তপনকুমার মুখোপাধ্যায় কোর্টে আরও জানান, এই যন্ত্র দু’টি এসএসকেএম হাসপাতালে বসানো হয়েছে এবং বিরল রোগের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও, কলকাতা পুলিশ হাসপাতালে ৫০ শয্যার একটি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক তৈরি করা হচ্ছে। পাঁচটি আইসিইউ শয্যাও সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই রোগে আক্রান্তদের ভাতা মাসে ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০০ টাকা করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এই রোগীদের বিশেষ পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রকল্প চালু করার জন্য পদক্ষেপকরা হচ্ছে। রাজ্যের রিপোর্ট দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসেরডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, মাসকুলার ডিসট্রফি রোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই মামলা করেছে। এ দিন তাদের আইনজীবী নন্দিনী মিত্র মাস্কুলার ডিসট্রফি রোগে আক্রান্ত কয়েকজন শিশুর আঁকা ছবি এ দিন প্রধান বিচারপতিশিবগণনম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাস-কে দেন। ওই শিশুরা উপহার হিসেবে এই ছবিগুলি পাঠিয়েছে।
এ দিন মামলাকারী সংগঠনের এক সদস্য কোর্টে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আর্জি জানান, গর্ভাবস্থায় যাতে মাস্কুলার ডিসট্রফি রোগের চিহ্নিতকরণ (প্রি-ন্যাটাল স্ক্রিনিং) করা হয়, সে ব্যাপারে নির্দেশ দিক আদালত। মামলায় আদালতবান্ধব হিসেবে নিযুক্ত চিকিৎসক সুচন্দ্রা মুখোপাধ্যায় জানান, এখনও এই পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, প্রসূতিদের এই রোগের মূল্যায়নে কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, সেই বিষয়ে তথ্য দেবে রাজ্য। আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানি।