• আট বছরেও রাজ্য সরকার নির্মাণ কাজের দর বদলায়নি, অভিযোগ BAI-এর
    এই সময় | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্র নানা ধরনের নির্মাণ কাজের জন্য স্থির করা দরে প্রতি বছর বদল করলেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে গত আট বছরে তা বদলায়নি বলে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে অভিযোগ করেছে দেশের নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (বিএআই) পূর্ব ভারতীয় শাখা। সংগঠনের তরফে প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি সুশান্ত কুমার বসু বলেন, ‘দেশের অন্য রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকার প্রতি বছর বিভিন্ন নির্মাণ কাজের জন্য নির্ধারিত দরে বদল করেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার বাজারদরের ভিত্তিতে সেই দর নির্ধারণ করা হয়। তার উপর ভিত্তি করে নির্মাণ সংস্থাগুলিকে কাজের জন্য দরপত্র জমা দিতে হয়। এ রাজ্যে ২০১৭ সালে শেষে রিভাইজ়ড শিডিউল অফ রেটস বদল করা হয়েছিল।’

    সংগঠনের তরফে কোষাধ্যক্ষ রাজা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এখন ইট, বালি, বিটুমেন, লোহা সমেত বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর যা দর দাঁড়িয়েছে, তাতে রাজ্য সরকারের নির্ধারিত ওই দরের উপরে ভিত্তি করে দরপত্র জমা দিয়ে কাজ করায় আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।’ সাত বছর আগে জিএসটি চালুর পরে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর দরের তুলনায় বর্তমান দর ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে বলে তিনি জানান। শুধু দরে বদলের বিষয়েই নয়, সড়ক হোক বা সেতু, নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ২-৩ বছর ধরে তার পাওনা টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে বলেও দাবি করেছে সংগঠনটি। কেন্দ্র প্রতি মাসে প্রকল্পের টাকা দিলেও এ রাজ্যে আগে বছরে দু’বার টাকা দেওয়া হতো। এখন ‘অর্থাভাবে’ তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি বিএআই-এর।

    এ প্রসঙ্গে রাজ্যের পুর্ত দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এ বিষয়ে কোনও চিঠি আসেনি। চিঠি পেলে অবশ্যই বিষয়টি দেখা হবে।’

    সুশান্তের কথায়, ‘রাজ্য ঠিকাদারদের মধ্যে বিপুল প্রতিযোগিতা রয়েছে। সরকার সেই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে। সর্বোপরি নির্মাণ সংস্থার ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় হলে তার নির্মাণ কাজের যোগ্যতা আলাদা ভাবে বিচার না করার নিয়ম চালু করেছে রাজ্য। এর ফলে কোনও না কোনও সংস্থা সেই কাজ ধরবেই।’

    রাজ্যের নির্মাণ ক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমিকের বিপুল অভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুদীপ কুমার দত্ত। এ দিন তিনি বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কনস্ট্রাকশন স্কিল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া তৈরি করা হয়। যার উদ্দেশ্যই হলো নির্মাণ কাজে দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা। কিন্তু, এর জন্য পর্যাপ্ত কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না।’ দক্ষ কর্মী ছাড়াও যে সমস্ত কাজ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে করা সম্ভব, সেখানে তার ব্যবহারে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁর দাবি।

    এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের ইউনিফর্ম কন্ট্র্যাক্ট কন্ডিশন তৈরি না করার সমালোচনা করেছে বিএআই। পুরোনো শর্তে সরকারের পক্ষেই বেশির ভাগ ক্ষমতা দেওয়া আছে বলে বিএআই-এর তরফে জানানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকার কোনও নির্মাণ কাজের জন্য পেমেন্ট দিতে দেরি করলেও তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য নয় বলে স্থির করা আছে।
  • Link to this news (এই সময়)