দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি, ঘুম উড়ে যাবে পাকিস্তানের
আজকাল | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনার কাছ থেকে ১১৪টি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ রাফালে যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব পেয়েছে এবং এনিয়ে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে। এই প্রকল্পে ফরাসি কোম্পানি দাসো অ্যাভিয়েশন ভারতীয় মহাকাশ শিল্প প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে।
প্রস্তাবটির আর্থিক পরিমাণ ধরা হচ্ছে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকারও বেশি, যেখানে দেশীয় উপাদানের অংশগ্রহণ থাকবে ৬০ শতাংশেরও বেশি। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই প্রস্তাব প্রতিরক্ষা সচিবের নেতৃত্বে প্রতিরক্ষা ক্রয় বোর্ডে আলোচনার জন্য তোলা হবে বলে জানা গেছে।
এই প্রকল্প সম্পন্ন হলে এটি ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি হবে। কয়েক দিন আগে ভারতীয় বায়ুসেনা ১১৪টি রাফালে কেনার জন্য যে স্টেটমেন্ট অব কেস প্রস্তুত করেছে, তা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে প্রতিরক্ষা অর্থ বিভাগসহ বিভিন্ন শাখা এনিয়ে কাজ করছে। আলোচনার পর প্রস্তাবটি DPB-তে যাবে, তারপর প্রতিরক্ষা ক্রয় পরিষদে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
এই চুক্তি সম্পন্ন হলে ভারতীয় বাহিনীর বহরে রাফালে বিমানের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৭৬। এর মধ্যে ইতিমধ্যেই ভারতীয় বায়ুসেনা ৩৬টি রাফালে পেয়েছে এবং ভারতীয় নৌবাহিনী চুক্তির মাধ্যমে আরও ৩৬টি অর্ডার করেছে। প্রস্তাবটি এগিয়ে আনা হয়েছে সম্প্রতি অপারেশন সিন্দুরে রাফালের সাফল্যের পরপরই। এই অভিযানে রাফাল তার অত্যাধুনিক স্পেক্ট্রা ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট ব্যবহার করে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে চীনা PL-15 এয়ার-টু-এয়ার মিসাইলকে কার্যকরভাবে পরাস্ত করে।
ভারতে তৈরি রাফাল যুদ্ধবিমানগুলোতে বর্তমান স্ক্যাল্প মিসাইলের চেয়ে আরও দীর্ঘ পাল্লার এয়ার-টু-গ্রাউন্ড মিসাইল থাকবে। এই স্ক্যাল্প মিসাইল পূর্বে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে সামরিক ও সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে হামলায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ রাফাল যুদ্ধবিমানগুলোতে দেশীয় উপাদানের অংশগ্রহণ ৬০ শতাংশেরও বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতে একটি মেইনটেন্যান্স, রিপেয়ার অ্যান্ড ওভারহল সুবিধা স্থাপনের পরিকল্পনা করছে, যা মূলত হায়দরাবাদে রাফালে ব্যবহৃত M-88 ইঞ্জিন মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য হবে। ইতোমধ্যেই দাসো ভারতে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, যা ফরাসি যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম দেখাশোনা করছে। এছাড়া টাটা-সহ একাধিক ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা এই প্রকল্পের অংশীদার হবে।
ভারতের জন্য নতুন যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্তি এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে, কারণ অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা করা প্রয়োজন। ভারতীয় বায়ুসেনার ভবিষ্যৎ যুদ্ধবিমান কাঠামো মূলত সু-৩০ এমকেআই, রাফাল এবং দেশীয় যুদ্ধবিমান প্রকল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে। ভারত ইতিমধ্যেই ১৮০টি এলসিএ মার্ক-১ যুদ্ধবিমান অর্ডার করেছে এবং ২০৩৫ সালের পর বিপুল সংখ্যক দেশীয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনাও করছে।