মিউটেশনের টাকা পড়েনি জমা, লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ চুঁচুড়া পুরসভায়, অভিযুক্ত কর্মী...
আজকাল | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: চুঁচুড়া পুরসভার নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। সময়ে পুরসভার কর্মীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হয় প্রতি মাসে। সেই পুরসভাতেই নিজস্ব তহবিলের টাকার তছরূপের অভিযোগকে ঘিরে শোরগোল।
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার আর্থিক টানাটানি দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। প্রায় দুই হাজার অস্থায়ী কর্মীদের প্রতি মাসে বেতন দিতে নাজেহাল হতে হয় পুর-কর্তৃপক্ষকে। ঘেরাও, বিক্ষোভ, কর্মবিরতি লেগেই থাকে। সামনেই পুজো তার আগে বোনাস কবে হবে এখনও ঠিক নেই। এমন পরিস্থিতিতে বড়সড় জালিয়াতি করে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ সামনে আশায় শোরগোল পড়েছে। পুরসভার কর দপ্তরের এক অস্থায়ী কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, মিউটেশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ যা পুরসভায় জমা পরার কথা সেই টাকা পুরসভার তহবিলে জমা পড়েনি। বিষয়টি নজরে আসতে পুরসভা কর্তৃপক্ষ ওই কর্মচারীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জেরায় ওই কর্মী স্বীকার করে নেন যে প্রায় ১৫টি এই রকম মিউটেশন তিনি করিয়েছেন। এক একটি মিউটেশনের ক্ষেত্রে কম করে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা জমা পরে পুরসভায়। সেই হিসাব করলে কয়েক লক্ষ টাকা আর্থিক তছরুপ হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুরপ্রধান অমিত রায় জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে যে এই কাজ একজনই করেছেন। তাঁকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “আমরা থানায় এফআইআর দায়ের করেছি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে। এর সঙ্গে যে বা যারা যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
পুরসভার কর্মচারীদের তৃণমূল পরিচালিত সংগঠনের সহ-সভাপতি অসীম অধিকারী বলেন, “প্রতিমাসে আমাদের বেতন নিয়ে টালবাহানা হয়। অথচ পুরসভার নিজস্ব তহবিলে যে টাকা জমা পরার কথা মিউটেশন এবং কর বাবদ দেখা যাচ্ছে সেই টাকা এই ভাবে তছরুপ করা হচ্ছে। যে বা যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এটা আমাদের দাবি। একটf দপ্তর রয়েছে তার একজন ইনচার্জ আছেন। তাঁরা কিছুই জানতে পারলেন না যে বিগত কয়েক মাস ধরে এই ঘটনা চলছে।”
সিআইটিইউ পরিচালিত শ্রমিক সংগঠনের সদস্য সৌরভ গাঙ্গুলি বলেন, “বিষয়টা আমরাও শুনেছি এটি নিয়ে তদন্ত চলছে। আমরা পুরসভাকে বলেছি আপনারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমরা সব ইউনিয়ন আপনাদের সঙ্গে আছি। কোনও ফাইল পাস হয়নি অথচ মিউটেশন হয়ে গিয়েছে। ফি বাবদ যে টাকা জমা পড়ার কথা সে টাকাও পুরসভা পায়নি। অথচ নাম পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। কত জনের মিউটেশন এ ইভাবে করে দেওয়া হয়েছে তার কোনও হিসেব এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এই কাজের সঙ্গে ঠিক কতজন যুক্ত সেটাও স্পষ্ট হয়নি। পুরসভাও এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে রাজি নয়।
তবে পুরসভার অন্দরে কান পাতলে শোনা যায় বিভিন্ন দপ্তরে এই ধরনের দুর্নীতি চলছে বহুদিন ধরেই। চেয়ারম্যানের দাবি, পুলিশের তদন্ত হলেই ‘দুধ কা দুধ, পানি কা পানি’ হয়ে যাবে গোটা বিষয়টি।