• মেট্রো স্টেশনে সহপাঠীকে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, হাওড়া স্টেশন থেকে ধরা পড়ল অভিযুক্ত
    আজকাল | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শেষরক্ষা হল না। পালিয়ে যাওয়ার আগেই গ্রেপ্তার হল দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের তদন্তকারী অফিসারদের হাতে হাওড়া স্টেশন থেকে ধরা পড়ে অভিযুক্ত পড়ুয়া। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিহার পালিয়ে যাওয়ার জন্য হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরার পরিকল্পনা করেছিল অভিযুক্ত। আগে থেকেই আঁচ করতে পেরে সাদা পোশাকের পুলিশ স্টেশনের ভিতরে এবং স্টেশনে ঢোকার বিভিন্ন গেট-এ নজরদারি চালাচ্ছিল। স্টেশনে ঢুকতেই তাকে ধরে ফেলে পুলিশ। অভিযুক্তকে জেরা করে ঘটনার কারণ এবং এই ঘটনায় তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা তা জানতে চাইছে পুলিশ। ধৃত বরানগর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। 

    শুক্রবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ এই খুনের ঘটনা ঘটে। জানা গিয়েছে, এদিন অভিযুক্ত পড়ুয়া এবং খুন হওয়া ছাত্র মনোজিৎ যাদব-সহ আরও কয়েকজন পড়ুয়া শ্যামবাজার থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী একটি ট্রেনে ওঠে। ট্রেনে ওঠার পর থেকেই মনোজিতের সঙ্গে অভিযুক্ত পড়ুয়ার কোনো একটি বিষয় নিয়ে গোলমাল লেগে যায়। গোলমাল গড়ায় হাতাহাতিতে। সেইসময় ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীরা তাদের নিরস্ত করেন। একটি সূত্রের দাবি, প্রণয়ঘটিত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লাগে। যদিও এবিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তকে জেরা করে কারণ না জানা পর্যন্ত এবিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়। জানা গিয়েছে, মনোজিত এবং অভিযুক্ত দু'জনেই একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া।

    অভিযোগ, দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে ট্রেন থেকে নামার পরেই হাতাহাতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছয়। সেইসময় আচমকাই একটি ছুরি বের করে সহপাঠী মনোজিতকে কোপাতে শুরু করে অভিযুক্ত। স্টেশন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে চাপ চাপ রক্ত। তাদের সঙ্গীরা আটকানোর চেষ্টা করলেও অভিযুক্ত ততক্ষণে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়ে দিয়েছে মনোজিতের উপর। এরপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত ওই পড়ুয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় বরানগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু ঘটে তার। 

    খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিনিয়র অফিসাররা। ঘটনার সময় উপস্থিত অন্যান্য পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা অভিযুক্তের বাড়ির সন্ধান পায়। কিন্তু বাড়িতে গেলে অভিযুক্তকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ বুঝতে পারে অভিযুক্ত পালিয়ে যাওয়ার মতলব করছে। সেই মতো হাওড়া, শিয়ালদহ ও অন্যান্য স্টেশনগুলিতে শুরু হয় নজরদারি। শেষপর্যন্ত হাওড়া স্টেশন থেকে তাকে ধরা হয়। 

    এই ঘটনার পর অন্যান্য মেট্রো যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রশ্ন ওঠে, যেখানে প্ল্যাটফর্মে ঢোকার আগে যাত্রীদের মালপত্র পরীক্ষা করে দেখা হয় সেখানে একজন কীভাবে ছুরি নিয়ে ট্রেনে উঠে পড়ল! পাশাপাশি তাঁদের ভীতি, কোপানোর সময় ছুরির আঘাত কোনো সাধারণ যাত্রীর গায়েও লাগতে পারত। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে যাত্রীদের আশ্বস্ত করে জানানো হয়েছে, মেট্রো সফরের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।
  • Link to this news (আজকাল)