• কোটি টাকারও বেশি পিএফ বকেয়া মাল পুরসভাকে কড়া চিঠি, শোরগোল
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: কোটি টাকারও বেশি বকেয়া পিএফ নিয়ে মাল পুরসভাকে এবার কড়া চিঠি। পাঁচদিনের মধ্যে ওই বকেয়া মেটাতে বলা হয়েছে প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তৃপক্ষের তরফে। নতুবা এরপর কোনওরকম নোটিশ ছাড়াই মাল পুরসভার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে চিঠিতে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার (দুই) শশাঙ্ক শেখর।

    মাল পুরসভায় প্রায় দু’শো অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। অভিযোগ, তাঁদের বেতন থেকে প্রতিমাসে পিএফের টাকা কেটে নেওয়া হয়। কিন্তু পুরসভার তরফে সমপরিমাণ টাকা দেওয়া তো দূরের কথা, কর্মীদের বেতন থেকে যে অর্থ প্রতিমাসে কাটা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সেটাও পিএফ অফিসে জমা পড়ছে না। কর্মীদের দাবি, চলতি আর্থিক বছরে বকেয়া পিএফের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা। সবমিলিয়ে বকেয়া কোটি টাকারও বেশি। অস্থায়ী কর্মীদের বেতন থেকে পিএফ বাবদ কেটে নেওয়া টাকা জমা না দিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ অন্য খাতে তা খরচ করছে বলে অভিযোগ।

    অস্থায়ী কর্মীদের পিএফ বকেয়া থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে মাল পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ির দাবি, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা বকেয়া রয়েছে। টাকার পরিমাণ অনেকটাই। সামনে পুজো থাকায় কর্মীদের বোনাসের বিষয়টিও রয়েছে। সেক্ষেত্রে পিএফের বকেয়া টাকা কীভাবে মেটানো যায় আমরা দেখছি। চেয়ারম্যান বলেন, কিস্তিতে বকেয়া পিএফের টাকা মেটানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে। এনিয়ে আমরা প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেব।

    বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি আঞ্চলিক পিএফ কমিশনারকে লিখিত অভিযোগ জানান ভুক্তভোগীরা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের তরফে এনিয়ে মাল পুর কর্তৃপক্ষের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইস্যু করা চিঠিতে বলা হয়েছে, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন থেকে পিএফ বাবদ অর্থ কেটে নেওয়ার পরও কেন তা জমা পড়েনি, কারণ সহ জানাতে হবে। একইসঙ্গে মাল পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারকে এনিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। যদিও বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে নারাজ।

    এরআগে মাল পুরসভার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাজের বরাত দেওয়া থেকে বেনিফিশিয়ারিদের সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া, বারবার অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একের পর এক অভিযোগ উঠতে থাকায় চেয়ারম্যান বদল হয় পুরসভায়। কিন্তু তারপরও নানা ইস্যুতে বারবার তোপের মুখে পড়ছে মাল পুর কর্তৃপক্ষ। এবার সামনে এল দীর্ঘদিন ধরে ওই পুরসভার প্রায় দু’শো অস্থায়ী কর্মীর প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা না দেওয়ার মতো ঘটনা। এনিয়ে পুজোর মুখে নয়া শোরগোল।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)