• রতুয়ার কুচিলায় আধার সংশোধনের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে লেনদেন, বিডিওর কাছে অভিযোগ প্রতারিতদের, খতিয়ে দেখছে সাইবার থানা
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, চাঁচল: আধার কার্ড সংশোধনের নাম করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ মালদহের রতুয়া ২ ব্লকের কুচিলা গ্রামে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় এক সিএসপির (গ্রাহক সেবা কেন্দ্র) আড়ালে এই চক্র সক্রিয় রয়েছে। সাধাসিধে বাসিন্দাদের নথিপত্র নিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে লক্ষাধিক টাকা লেনদেন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

    স্থানীয়দের কথায়, অভিযুক্ত শুধুমাত্র গ্রামের গরিব ও নিরক্ষর মানুষদের টার্গেট করেই এই চক্র চালাচ্ছিল। ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার পর গোপনে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে দফায় দফায় বিপুল টাকা ঢোকানো হলেও টের পেতেন না প্রতারিতরা। কিন্তু কোথা থেকে ওই টাকা অ্যাকাউন্টে জমা হতো, বা পরে সরিয়ে ফেলা হতো, তা জানা নেই গ্রাহকদের।

    স্থানীয় জাকির শরিফ এই প্রতারণা চক্রের মাথা বলে অভিযোগ। তিনি প্যান কার্ড সহ অনলাইনে যাবতীয় কাজ করেন। আধার সংশোধনের জন্য ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষের অজান্তে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে প্রতারণা চালানো হচ্ছে বলে দাবি প্রতারিতদের। তাঁদের একাংশই ব্লক অফিসে অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শরিফ। তিনি  বলেন, ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।

    প্রতারিত রোজিনা বিবির কথায়, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মূল শাখা মালদহ সদরে। সেখানে গিয়ে স্টেটমেন্ট দেখে জানতে পারি, কয়েক দফায় ৪০ হাজার টাকা ঢুকেছে। আবার সব তুলেও নেওয়া হয়। অথচ অ্যাকাউন্ট খোলার কথাই জানি না। একবার আধার সংশোধনের জন্য শরিফের দোকানে গিয়েছিলাম। তারপর থেকেই বারবার ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিত। তখন কিছুই বুঝতে পারিনি।

    আর এক প্রতারিত আবদুল বারি বলেন, শরিফের দোকানে আধার কার্ড সংশোধন করতে গিয়েছিলাম। পরে নথি নিয়ে বারবার ডেকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে থাকে। মোবাইলের মেসেজও মুছে দিত। একদিন ছেলেকে ফোন দেখালে জানতে পারি আমার অজানা অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা করে কয়েকবার ঢুকেছে। সব মিলিয়ে এক লক্ষ এগারো হাজার টাকা তুলেও নেওয়া হয়। আতঙ্কে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। 

    এদিকে বিষয়টি সামনে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। অভিযোগ খতিয়ে দেখে রতুয়া-২ এর বিডিও শেখর শেরপা বলেন, এই টাকা সরকারি কোনও প্রকল্পের নয়। তবে বিষয়টি ভয়ংকর। সাইবার থানায় জানানো হয়েছে। মালদহ সাইবার থানার এক আধিকারিক বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    প্রথমদিকে অভিযুক্ত শরিফকে এনিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বিষয়টিকে উড়িয়ে দেন। পরে অভিযোগকারীদের হুমকি দিতেন বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা নাসিরুদ্দিন বলেন, অনেকে খেটে খাওয়া মানুষ। এসব তাঁরা কিছু জানেন না। এভাবে চলতে থাকলে. আমরা কোথায় যাব। প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক।
  • Link to this news (বর্তমান)