বাংলাদেশ সীমান্তে বারবার ‘অপহরণ’, আতঙ্কে মেখলিগঞ্জের কৃষকরা
বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, মেখলিগঞ্জ: শীতলকুচি সীমান্তে চাষিদের অপহরণ ও আটকের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে মেখলিগঞ্জের সীমান্ত এলাকাতে। যদিও মেখলিগঞ্জে সাম্প্রতিককালে এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবু শীতলকুচির পর থেকেই সীমান্তবর্তী চাষিদের মনে অস্বস্তি বাড়ছে। গত মঙ্গলবার শীতলকুচি সীমান্ত থেকে ভারতীয় চাষি কৃষ্ণকান্ত বর্মনকে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়। আর পরদিনই চাষি নাছির মিয়াঁকে সীমান্ত অতিক্রমের অভিযোগে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কয়েক ঘণ্টা আটক করে। নাছির মিয়াঁর জমির ফসল নষ্ট করেছিল বাংলাদেশের গবাদিপশু। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তিনি ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করেছিলেন বলে জানা যায়। এরপরেই বাংলাদেশি গ্রামবাসীরা তাঁকে ধরে বিজিবির হাতে তুলে দেয়। দু’টি ঘটনারই প্রভাব পড়েছে মেখলিগঞ্জেও। ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ছ’টিই সীমান্তঘেঁষা। এখানকার বহু কৃষকের জমি কাঁটাতারের বেড়ার ভিতরে। ফলে নির্দিষ্ট গেট দিয়ে নিয়ম মেনে জমিতে যেতে হয়। কিন্তু অনেক এলাকায় এখনও বেড়া হয়নি। তিস্তা-সানিয়াজান নদী সংলগ্ন অঞ্চল, কুচলিবাড়ি সীমান্তের দহগ্রাম-অঙ্গারপোঁতা ও চ্যাংরাবান্ধার মতো এলাকায় কাঁটাতার দেওয়া সম্ভব হয়নি। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে সীমানা পিলারও উধাও হয়ে গিয়েছে। ফলে কৃষকদের পক্ষে জমির সীমারেখা চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। তাঁদের দাবি, সীমান্তে কাজ করতে গিয়ে যেকোনও সময় ভুলক্রমে সীমান্ত পেরিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে, মেখলিগঞ্জের বিএলআরও সুজন রায় জানিয়েছেন, দহগ্রাম- অঙ্গারপোঁতা সীমান্ত এলাকায় বেড়া দেওয়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছে। বিএসএফের উত্তরবঙ্গের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মেখলিগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় সর্বদা কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। উন্মুক্ত এলাকাতেও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। ভারতীয় কৃষকরা যাতে জমিতে নির্ভয়ে কাজ করতে পারেন সেদিকেও তাঁদের নজর রয়েছে। সামনেই দুর্গাপুজো। শীতলকুচির ঘটনার পর আতঙ্ক ছড়িয়েছে মেখলিগঞ্জ সীমান্তেও। সীমান্তবাসীদের দাবি, দ্রুত কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া ও সীমানা পিলার বসানো না হলে প্রতিদিনই নতুন করে বিপদের আশঙ্কা থেকে যাবে। ফাইল চিত্র।