নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বর্ষা ও নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিতে বাঁকুড়া শহরের রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে পড়েছে। পুজোর মুখে ওইসব বেহাল রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে বাঁকুড়া পুরসভা। শহরের পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে যাওয়ার রাস্তাও সংস্কার করা হচ্ছে। ছাতনা থেকে শুশুনিয়া পাহাড় যাওয়ার রাস্তার বেহাল অংশ মেরামত করা হচ্ছে। মুকুটমণিপুর সহ জেলার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তার পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার বলেন, পুজো শুরু হতে আর বেশিদিন নেই। আপাতত রাস্তার আমূল সংস্কার হবে না। পরিবর্তে রাস্তায় তাপ্পি মেরে পুজোর সময় চলাচলের উপযোগী করা হবে। পরে টাকা পেলে রাস্তাগুলির আমূল সংস্কার করা হবে।
পূর্তদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, সারা বছরই রাস্তাঘাট সংস্কারের কমবেশি কাজ হয়। তেমনই কিছু কাজ চলছে। বর্ষায় বহু রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। আমরা সেসব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া-দুর্গাপুর, বাঁকুড়া-রানিবাঁধ রাজ্য সড়কের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। সেগুলিরও আমূল সংস্কারের প্রয়োজন। এখন তহবিলের অবস্থা ভালো নয়। দপ্তর অর্থ বরাদ্দ করলেই আমরা রাস্তাগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হব।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন কারণে বর্তমানে বাঁকুড়া শহরের রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে গিয়েছে। পিচের পাশাপাশি ঢালাই রাস্তা থেকেও পাথর, সিমেন্ট উঠে গিয়ে রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। গ্যাস ও পানীয় জলের পাইপ লাইন বসানোর জন্যও যথেচ্ছ রাস্তা কাটা হচ্ছে। পরে তা মেরামত করা হচ্ছে না। তারফলে বাসিন্দাদের ভোগান্তি বাড়ছে। বর্ষার বৃষ্টিতে রাস্তার মান আরও খারাপ হচ্ছে। রাস্তার মাঝে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। ওইসব গর্তে পড়ে গিয়ে পথচারী, সাইকেল ও বাইক আরোহীরা জখম হচ্ছেন। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সিআইসি সদস্যদের ওয়ার্ডেও রাস্তার অবস্থা খারাপ। জুনবেদিয়া বাইপাস সংলগ্ন ওই ওয়ার্ডে জমি হাঙরদেরও দাপট রয়েছে। জমি মাফিয়ারা রাস্তার পাশে একাধিক ফাঁকা প্লট ফেলে রেখেছে। সেখানে জল জমছে। তারফলে রাস্তার নীচের অংশের মাটি নরম হয়ে বিপত্তি হচ্ছে। যানবাহনের চাপে জায়গায় জায়গায় রাস্তা বসে যাচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে নিকাশি নালার কাজ করার জন্যও রাস্তা কাটা হচ্ছে। পরে ওই হালেই রাস্তা ফেলে রেখে ঠিকাদাররা চলে যাচ্ছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তারফলেও স্থানীয়দের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা শঙ্কর গোস্বামী, রীতা পাল বলেন, বর্ষার আগেও রাস্তাঘাট ভালো ছিল। তবে বর্তমানে শহরের বেশিরভাগ রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বাইক, সাইকেল বা চারচাকার চালক, আরোহীদের কাছে রাস্তায় বের হওয়া কার্যত বিভিষীকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। হেঁটেও রাস্তা দিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তার যা অবস্থা তাতে আমূল সংস্কার প্রয়োজন। তবে আপাতত পুজোর আগে সেগুলি চলাচলযোগ্য করলেও হবে।