• কৃষ্ণনগরের শিল্পালয়গুলিতে দুর্গাপ্রতিমার সঙ্গে বিশ্বকর্মার মূর্তি তৈরির ব্যস্ততা চরমে
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর : দুর্গোৎসবের আর বাকি মাত্র দু’সপ্তাহ। তার আগে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পটুয়াপাড়াগুলিতে চলছে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা তৈরির পর্ব। এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই কৃষ্ণনগরের মৃৎশিল্পালয়গুলিতে। যাকে বলে শিরে-সংক্রান্তি। বিশ্বকর্মার প্রতিমা গড়ার শেষ মুহূর্তের কাজে এখন চরম ব্যস্ত কৃষ্ণনগর শহরের পটুয়াপাড়াগুলি ।

    কেউ প্রতিমায় রঙের শেষ তুলির টান দিচ্ছেন, তো কেউ আবার মসৃণ করছেন প্রতিমার মুখাবয়ব। মৃৎশিল্পীদের হাতের জাদুতে গড়ে উঠছে দেবশিল্পীর প্রতিমা। যেখানে ধাতব সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি এবং সৃজনশীলতার ছোঁয়া যেন একসঙ্গে ধরা দিচ্ছে শিল্পীর হাতযশে। 

    বিশ্বকর্মা পুজো ঘিরে কৃষ্ণনগর শহরে এক বিশেষ উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রতিমা শিল্পী থেকে শুরু করে আলো-সাজসজ্জার কারিগররা, সবাই এখন সময়ের সঙ্গে পল্লা দিয়ে কাজ করছেন।

    বেশিরভাগ শিল্পী বলছেন, বিশ্বকর্মা প্রতিমার চাহিদা বেশ ভালো আছে। আগে তো বিশ্বকর্মার সেভাবে অর্ডার আসত না। বিগত কয়েক বছর ধরে বিশ্বকর্মা পুজোতেও বড় প্রতিমার বরাত আসছে। তবে ছোট ঠাকুরের চাহিদা অনেক বেশি। শহর ও আশপাশের এলাকায় বড় কারখানা থেকে ছোট গ্যারেজ, এমনকি, অনেক স্কুল-কলেজেও বিশ্বকর্মার আরাধনা হয়ে থাকে। তাই প্রতিমার অর্ডারও বেড়েছে ভালোই।  ঠাকুরের দাম ন্যূনতম ৫০০ টাকা থেকে শুরু। অর্ডার ছাড়া ঠাকুরগুলি দু’একদিনের মধ্যেই রাজবাড়ি, পোস্ট অফিস মোড়ে নিয়ে যাওয়া হবে বিক্রির উদ্দেশে। প্রতিমা শিল্পী কানাই পাল বলেন, প্রায় ৫০টির উপর ঠাকুর বানিয়েছি এবার।  কুড়িটার মতো অর্ডার আছে। বাকিগুলি বিক্রি করতে নিয়ে যাব। কাঁচামালের দাম বাড়ায় গতবছরের তুলনায় প্রতিমা কিনতে একটু বেশি খরচ করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। একদিকে দুর্গা, কালী তার উপর বিশ্বকর্মা থাকায় রাতদিন একভাবে কাজ করে যেতে হচ্ছে।  

    মৃৎশিল্পী নীলাদ্রি পাল বললেন, আগে  দু’একটি প্রতিমার অর্ডার পেতাম। এখন দশ-পনেরোটি প্রতিমা বানাতে হয়। সময় খুব কম। তাই রাতেও কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এই প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা শুধু উৎসবের আনন্দই নয়, কৃষ্ণনগরের অসংখ্য পরিবারকে দেয় জীবিকার আশ্বাস। 

    কৃষ্ণনগরের এক শিল্পালয়ে বিশ্বকর্মার সুসজ্জিত  প্রতিমার সারি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)