• সোশ্যাল মিডিয়ায় বাড়ি বিক্রির নামে ফাঁদ, বহরমপুরে গ্রেপ্তার ৩ প্রতারক
    বর্তমান | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: এবার বাড়ি বিক্রির ভুয়ো তথ্য ও ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে প্রতারণা করছে প্রতারকরা। বাড়ি বিক্রি আছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করছে। সেই পোস্টে দেওয়া হচ্ছে দু’টি মোবাইল নম্বর। বাড়ি কিনতে ইচ্ছুকরা ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা জমা দিতে বলছে প্রতারকরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ এই প্রতারক গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম তাপস সিং, আলমগির শেখ, আসাদ শেখ। তাদের তিনজনেরই বাড়ি বহরমপুরে। 

    এই গ্যাংয়ের শিকার হয়েছেন হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির জামাইবাবু। পেশায় চিকিৎসক মহম্মদ রুহুল আমিনের একটি বাড়ির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিন কোটি টাকা দাম রাখা হয়। রুহুল আমিন সাহেবের বাড়ি হরিহরপাড়ায় হলেও তিনি আসানসোলে কর্মরত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরই বাড়ি বিক্রির ছবি দেখে তিনি মুর্শিদাবাদ সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন। সাইবার ক্রাইম থানা একটি দল গঠন করে তদন্ত শুরু করে। এদিন ওই গ্যাংয়ের তিনজনকে বহরমপুর থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। 

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(লালবাগ) রাসপ্রীত সিং বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে ৫০টিরও বেশি ভুয়ো দলিল উদ্ধার হয়েছে। তাদের মোবাইল ফোনে একাধিক বাড়ির ছবি রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চক্রের সদস্যরা শহর ও শহর সংলগ্ন বিভিন্ন ব্লকে ঘুরে ঘুরে রাস্তার ধারে থাকা সুন্দর বাড়ির ছবি তুলছে। এরপর ওই বাড়ি বিক্রি আছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করছে। বাড়িগুলির ছবি বিভিন্ন প্রপার্টি বায়িং এবং সেলিং গ্রুপেও পাঠানো হচ্ছে। অধিকাংশ পোস্টেই দু’টি মোবাইল নম্বর দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি কিনতে ইচ্ছুকরা ওই নম্বরে যোগাযোগ করলে অগ্রিম হিসেবে ২০ হাজার টাকা জমা দিতে বলছে প্রতারকরা। ওই টাকা পাওয়ার পর বাড়ি কিনতে ইচ্ছুকদের সঙ্গে ভুয়ো বাড়ির মালিকের দেখা করিয়ে দিচ্ছে প্রতারকরা। ইচ্ছুকরা বাড়ি দেখতে চাইলে তাঁদের প্রথমে নকল চুক্তিপত্রে  সই করানো হচ্ছে। তখন আরও আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকা দাবি করা হচ্ছে। ওই টাকা হাতে পাওয়ার পর নির্দিষ্ট দিনে বাড়ি দেখানোর কথা বলে ভ্যানিশ হয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা। ব্লক করে দেওয়া হচ্ছে মোবাইল নম্বরও। 

    রুহুল সাহেব বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার বাড়ির ছবি দিয়ে বিক্রি হবে বলে পোস্ট করে প্রতারকরা। আমার এক আত্মীয় ওদের ফোন করে বাড়ি কিনতে চাইলে অগ্রিম ২০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। বাড়িটি অন্যজনকে বিক্রি করা হবে না বলে আশ্বস্ত করে। সাইবার থানায় অভিযোগ জানানোর পর ক্রেতা সেজে আমার আত্মীয় ওদের দেওয়া নির্দিষ্ট ঠিকানায় গেলে তাঁর সঙ্গে থাকা সাইবার থানার অফিসাররা প্রতারকদের গ্রেপ্তার করে। এদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।
  • Link to this news (বর্তমান)