স্কুল থেকে বেরিয়েই ছুরি নিয়ে হুমকি রানার! কেন শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশনে নজরদারিতে ফাঁক?
প্রতিদিন | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অর্ণব দাস, বারাকপুর: ভরদুপুরে ব্যস্ত দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে স্কুল ছাত্রের খুনের ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। শ্যামবাজার থেকে মেট্রো ধরার আগে মনোজিতের সঙ্গে বচসায় সময়ই ছুরি বার করে হুমকি দিয়েছিল ধৃত রানা সিং! সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও এর প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। কলকাতা-সহ শহরতলির সকল মেট্রো স্টেশনেই রয়েছে ব্যাগ স্ক্যানিং ও মেটাল ডিটেক্টরের ব্যবস্থা, সঙ্গে কড়া নজরদারির জন্য একাধিক সিসি ক্যামেরা। তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ভিড়ে ব্যাগ স্ক্যানিং বা মেটাল ডিটেক্টরের এড়িয়ে গেলেও শ্যামবাজার স্টেশনে ছুরি বের করা সিসি টিভির নজরে এল না কেন?
যদি স্টেশন থেকে বেরনোর সময় হামলার ঘটনার বদলে চলন্ত মেট্রোতেই ঘটত? এখন সেটি ভেবেই আঁতকে উঠছেন অনেকে। শনিবার রানা সিংকে বারাকপুর আদালতে পেশ করে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্তকারীরা জেনেছেন, নাবালিকা এক স্কুলছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েই ধৃতের সঙ্গে নিহত মনোজিৎ যাদবের এক বন্ধুর বিবাদ শুরু গত সপ্তাহের শেষের দিকে। বিষয়টি বাগবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহপাঠীদের অজানাও নয় বলে খবর। গতকাল, শুক্রবার স্কুলে পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে রানাকে জিজ্ঞাসা করলে নতুন করে পুরনো বিবাদ উস্কে ওঠে বলে অভিযোগ। এরপরই শ্যামবাজার মেট্রো স্টেশন থেকে শুরু হয় দু’জনের গণ্ডগোল। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সেখানেও একবার ব্যাগ থেকে ছুরি বার করে মনোজিৎকে হুমকি দেয় রানা।
দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে নেমেও ফের দু’জনের বচসা বাধে। ব্যাগ থেকে ছুরি বার করে হুমকি দেওয়া হয়! এরপর সরাসরি বন্ধুর বাঁ কাধের নিচে বুকে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় অভিযুক্ত! তখন হৃদপিণ্ডে আঘাত লেগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয় একাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়ার। এই ঘটনা ঘটার পরই সোজা বরানগর আলমবাজারের বাড়ি গিয়ে মা-বাবা, দিদির কাছে খুনের কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত। একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে বিহারের ছাপড়ায় আত্মীয়র বাড়ি যাবে বলে ঠিক করে পরিবার। সেইমত স্বপরিবারে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরবে বলেও রওনা দেয় তাঁরা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অনুপম সিং বলেন, “খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বয়ান যাচাই করতে নিহতের যে বন্ধুর নাম জানা গিয়েছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”