ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ১৩ বছরের ছাত্রের দেহের টুকরো, উদ্ধার তার বাবা-মায়ের নিথর দেহও! এই রাজ্যে হাড়হিম হত্যাকাণ্ড
আজকাল | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাড়ির মধ্যে থেকে উদ্ধার এক পরিবারের সকল সদস্যের মৃতদেহ। ওই পরিবারের তিনজন সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধারকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি দম্পতির ১৩ বছরের সন্তানের দেহটি টুকরো টুকরো অবস্থায় পাওয়া গেছে বাড়ির মধ্যে থেকেই।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে অসমের দারাং জেলায়। গত বৃহস্পতিবার সিপাঝাড় থানার অন্তর্গত নরকালী মন্দিরের অদূরেই এই বাড়ি থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৫৫ বছরের দীপক নাথের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ওই বাড়ির পাঁচিলের পাশ থেকে। তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
দীপকের স্ত্রী প্রতিমা নাথের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া গেছে ঘরের মধ্যে। তিনি গলা কাটা অবস্থায় ছিলেন। পাশাপাশি দম্পতির ১৩ বছরের ছেলে ধৃতী রাজ নাথের দেহের টুকরো টুকরো অংশ উদ্ধার করা হয়েছে ঘরের মধ্যে থেকে। সে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, একাধিক ডাকাডাকির পরেও পরিবারের সদস্যদের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনকী ফোন করার পরেও মেলেনি কোনও সাড়া। অবশেষে বাড়ির মধ্যে ঢুকে খোঁজ শুরু করেন প্রতিবেশীরা। তখনই দেহগুলি তাঁদের চোখে পড়ে। তড়িঘড়ি করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসেই বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের মৃতদেহ। এক দম্পতি ও তাদের তিন খুদে সন্তানের নিথর দেহকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। দিল্লির সেই বুরারিকাণ্ডের ছায়া এবার খাস নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে। গুজরাটে এক পরিবারের পাঁচ সদস্যের রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে শুরু হয়েছে তদন্ত।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের আহমেদাবাদের বাগোদারায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন বিপুল ভাগেলা ও সোনাল ভাগেলা এবং তাঁদের ১১ ও পাঁচ বছরের দুই কন্যাসন্তান ও আট বছরের এক পুত্রসন্তান। রবিবার সকালে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিন সকালে প্রতিবেশীরাই পুলিশে প্রথম খবর দেন। ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় পুলিশ বাহিনী, অ্যাম্বুল্যান্স। দুটি ঘর থেকে পাঁচজনের দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা পাঁচজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, দুই কন্যাসন্তান ও এক পুত্রসন্তানকে খুন করে দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছে।
এদিকে মৃত দম্পতির পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, তাঁরা আদতে ঢোলকার বাসিন্দা ছিলেন। কিন্তু কয়েক মাস আগে বাগোদারায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন। বিপুল পেশায় অটোরিকশা চালক ছিলেন। পরিবারে তিনি একাই উপার্জন করতেন। সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতেন। আর্থিক অনটনের কারণেই হয়তো চরম পদক্ষেপ করেছেন।
পরিবারের তরফে আরও জানা গেছে, কয়েক মাস আগে বিপুল ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কিনেছিলেন। সেটির ধাঋণ শোধ করতে পারছিলেন না। একদিকে সংসারের চাপ, অন্যদিকে ঋণের বোঝা। সবমিলিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তিন সন্তানকে বড় করে তোলার মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না তাঁর। ঋণের কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অনুমান পরিবারের।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে তবেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। ঋণ শোধ করার জন্য কেউ চাপ সৃষ্টি করতেন কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মহত্যায় কেউ বা কারা প্ররোচনা দিয়েছিল কিনা, তাও তদন্তের আওতায় রয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্ত জারি রয়েছে।