রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ‘পিপিপি’ মডেলে থাকা অডিয়ো ভেস্টিবুলার ক্লিনিকগুলিতে (অডিয়োলজি এবং স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি বিভাগ) দুর্নীতির অভিযোগ করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় রাজ্যের থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশ, মামলাকারীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যকে বিস্তারিত তথ্য হলফনামা আকারে জমা দিতে হবে। কোর্টের ‘আশা’, সেই রিপোর্টে রাজ্য এই ‘পিপিপি’ মডেলে যুক্ত সংস্থাগুলির নামও প্রকাশ করবে। পুজোর ছুটির পরে মামলাটির ফের শুনানি হবে।
আদালতের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে (পিপিপি) মডেলে অডিয়ো ভেস্টিবুলার ক্লিনিক চলছে। জন্ম থেকে কথা বলার এবং শোনার সমস্যা থাকলে রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-সহ আনুষঙ্গিক যাবতীয় কাজ এই ক্লিনিকে হয়। বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এই ক্লিনিকগুলি চালায়। মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত, বিক্রম বন্দোপাধ্যায় এবং শিঞ্জিনী চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, অডিয়োলজিস্টের উপযুক্ত যোগ্যতা নেই, এমন সব কর্মী দিয়ে অডিয়োলজি এবং স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি বিভাগের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজ করানো হচ্ছে। এ ছাড়াও, ভুয়ো বিল-সহ অন্যান্য দুর্নীতির অভিযোগও জানানো হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়কারী চিকিৎসক এবং টেকনিশিয়ানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নির্দিষ্ট নথিও মামলার আবেদনপত্রের সঙ্গে কোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে।
কোর্টের খবর, রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষার নামে যে গরমিল করা হচ্ছে, তারও নথি প্রমাণ হিসেবে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা জানান, শ্রবণশক্তি হারানো রোগীদের এই ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ‘হিয়ারিং এড’ পাওয়ার কথা। কিন্তু তা চড়া দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকি, প্রয়োজন না-থাকা সত্ত্বেও রোগীদের কানের অস্ত্রোপচার করার সুপারিশ করা হচ্ছে। আইনজীবীদের দাবি, হাসপাতালের সরকারি কর্মচারী এবং বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের যোগসূত্রে এই অনিয়ম চলছে। প্রতিবন্ধী রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার স্বার্থে এবং সরকারি কোষাগারের অর্থ নয়ছয় রুখতে এই অনিয়মের উপযুক্ত তদন্তের নির্দেশ দিক আদালত—এই আর্জি জানান আইনজীবীরা।