আরপিএফের অভাবেই কি ফাঁক মেট্রো স্টেশনের নিরাপত্তায়
আনন্দবাজার | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে শুক্রবার ভরদুপুরে এক পড়ুয়াকে হত্যার ঘটনায় মেট্রো পরিসরে নিরাপত্তার ফাঁকফোকর নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনাকে স্টেশনের পেড এরিয়ার (টিকিট কেটে যে অংশে ঢুকতে হয়) বাইরের ঘটনা হিসাবে দেখলেও নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরিহয়েছে বলেই মত যাত্রীদের বড় অংশের। মেট্রোর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরপিএফ কর্মীদের বিপুল ঘাটতিই কি তবে এই ফাঁকের অন্যতম কারণ?
ওই ঘটনার পরে মেট্রোর তরফে যদিও সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি স্টেশনের বাইরের ঘটনা। এ ভাবে যাত্রীদের আশ্বস্ত করা হলেও মেট্রোর অন্দরের অস্বস্তি কাটছে না।অভিযুক্ত ছাত্র স্কুলব্যাগে ছুরি নিয়ে মেট্রোয় সফর করলেও তা কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি কেন? ভিড়ের সময়ে বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের একাংশের স্ক্যানার এড়িয়ে প্ল্যাটফর্মের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকলেও তা ঠেকানোর লোকবল বহু স্টেশনেই নেই বলে অভিযোগ।
একক ভাবে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর ২৬টি স্টেশন ছাড়াও পার্ক স্ট্রিটের মেট্রো ভবন, কারশেড-সহ অন্যান্য বিভিন্ন পরিকাঠামোর নিরাপত্তার স্বার্থে যে সংখ্যক আরপিএফ কর্মী প্রয়োজন, বাস্তবে তার চেয়ে কর্মী অন্তত দেড়শো জন কম বলে সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রের খবর। অতীতে ব্যস্ত সময়ে স্টেশনের ভিড় সামাল দেওয়া ছাড়াও সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করত আরপিএফ। এমনকি, প্ল্যাটফর্মে অবাঞ্ছিত ঘটনা এড়াতে সেখানেও আরপিএফ মোতায়েন করা হত। রাতে স্টেশনের নিরাপত্তার দায়িত্ব এখনও আরপিএফের ঘাড়েই রয়েছে।
দিনে এবং রাতে ওই সব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বহু দিন ধরে বিভিন্ন স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম এবংপ্রবেশপথে আর রক্ষী মোতায়েন করা সম্ভব হয় না বলে মেট্রো সূত্রের খবর।বস্তুত, এ ক্ষেত্রেও একটি মেট্রোপথ বা লাইন চালানোর উপযোগী আরপিএফ কর্মী নিয়ে পাঁচটি লাইন সামলানোর অভিযোগ উঠছে সংস্থার মধ্যেই।
মেট্রো সম্প্রসারণের পরে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় আরপিএফ কর্মীর সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। কিছু ক্ষেত্রে মেট্রো রেল পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের সাহায্য নিয়ে পরিস্থিতি সামলাতে হয় বলে অভিযোগ। কলকাতা মেট্রোর প্রগতিশীল কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘একটি লাইনের কর্মী দিয়ে যে পাঁচটি লাইন চালানো সম্ভব নয়, সে কথা রেলমন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে।’’
মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য সুরক্ষার ফাঁকফোকরের কথা মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, যন্ত্র-নির্ভর নজরদারি অনেক বেড়েছে। তাই সর্বত্র রক্ষীর প্রয়োজন নেই।