• সীমান্তের গ্রামে নতুন মুখে ছড়াচ্ছে ভয়
    আনন্দবাজার | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • গ্রামে ঘুরছে নতুন মুখ। ফের উধাও হয়ে যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ এলাকার হাতেগোনা কয়েক জনের পরিচিত। স্থানীয় সেই বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গ্রামে আগন্তুক নতুন মুখগুলি নেপালের জেলে বন্দি ছিলেন। তারা ভারতীয় বাসিন্দা। অভিযোগ, তাদের কেউ ৩-৪ বছর আগে, কেউ ৫-৭ বছর আগে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতেন। কখন যে মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন, তা-ও গ্রামের অনেকের অজানা। নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি এবং আশপাশের এলাকায় নতুন সে সব মুখ নিয়েই ভয় ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ।

    পানিট্যাঙ্কি লাগোয়া একটি গ্রামের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘অপরিচিত মুখ দেখে পুলিশকে ফোন করা হয়েছিল। পুলিশ তাদের বাড়িতে যেতে না যেতেই উধাও হয়েছে।’’ আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এক সময় যারা গ্রামের ত্রাস ছিলেন, তারা ঘরে ফিরলে ভয় থাকারও কথা। জেলবন্দি ছিলেন যখন, পরিবেশ শান্ত ছিল।’’ পুলিশ এবং সশস্ত্র সীমা বল অবশ্য সে রকম অভিযোগ মানতে নারাজ। নেপালের জেল থেকে পালানো কেউ ভারতে প্রবেশ করার খবর তাঁদের কাছে নেই বলে দাবি। এখনও পর্যন্ত কেউ ধরাও পড়েনি। তবে প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, পানিট্যাঙ্কি সীমান্ত এলাকার কয়েক জন মাদক মামলায় নেপালের জেলে বন্দি ছিলেন। এসএসবির পানিট্যাঙ্কির কমান্ড্যান্ট দুর্গেশ পান্ডে বলেন, ‘‘সে রকম কেউ ধরা পড়েনি। সীমান্তে কড়া নজরদারি জারি রয়েছে।’’

    এ দিন কাঠমান্ডু থেকে পানিট্যাঙ্কি দিয়ে ভারতে ফিরেছেন মালবাজারের বাসিন্দা মালা লামা। তিনি কাঠমান্ডুতে মামাবাড়ির এক আত্মীয়ের মৃত্যুর খবরে গিয়েছিলেন গত রবিবার। সোমবার থেকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। মালার বক্তব্য, ‘‘নেপালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। সকালের দিকে কিছু গাড়ি চলছে।’’

    এ দিনও অনেক শ্রমিক নেপাল থেকে ঘরে ফিরেছেন। কিছু জ্বালানির ট্রাক নেপালে গিয়েছে। কিছু নেপালের নাগরিকও তাঁদের দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে আসা নাগরিকদের সাহায্য করতে পানিট্যাঙ্কিতে শিবির বসিয়েছে তৃণমূল। ঘন ঘন সীমান্তে গিয়ে ঘরে ফেরাদের খোঁজ নিচ্ছে বিজেপিও। তা দেখে অনেকে দুই দলের সাহায্যের নামে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার অভিযোগ তুলছে।

    এ দিন পানিট্যাঙ্কিতে গিয়ে এসএসবি-র সঙ্গে কথা বলে সীমান্তের পরিস্থিতি জেনে নেন বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ। আনন্দময় বলেন, ‘‘রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের ছবি আরও স্পষ্ট করেছে নেপালের পরিস্থিতি। সেই পরিযায়ীরা যখন ক্লান্ত হয়ে দেশে ফিরছেন, তখন তাঁদের পাশে দাঁড়ানো হচ্ছে। তাঁরা কাজ চান।’’

    খড়িবাড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি কিশোরীমোহন সিংহ বলেন, ‘‘বিজেপি রাজনীতি করতে সীমান্তে যাচ্ছে। ওঁরা ভারতীয়দের স্বসম্মানে দেশে ফেরাতে অক্ষম।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)