• মিড ডে মিল খেয়েই পেটে ব্যথা, ঘনঘন বমি! স্কুল থেকে সোজা হাসপাতালে প্রায় ১০০ পড়ুয়া, বিষক্রিয়ার অভিযোগে বিক্ষোভ অভিভাবকদের
    আজকাল | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুলে মিড ডে মিলে রুটি ও তরকারি দেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্যকর খাবার পেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়া। দুপুরে মিড ডে মিল খাওয়ার পরেই অসুস্থ ৯০ জন পড়ুয়া। তড়িঘড়ি হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে তাদের। যে ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজস্থানে। 

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের দৌসা জেলায়। শুক্রবার রাতে ওই জেলার এক সরকারি স্কুলের কমপক্ষে ৯০ জন পড়ুয়া মিড ডে মিল খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সকলকেই ওই রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের তরফে জানা গেছে, অসুস্থ পড়ুয়াদের প্রত্যেকের উপসর্গ এক। সকলের পেটে যন্ত্রণা, ঘনঘন বমির মতো উপসর্গ ছিল‌। চিকিৎসকদের দাবি, মিড ডে মিলের খাবারে বিষক্রিয়ার জেরেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চুড়িয়াওয়াস গ্রামের গভর্মেন্ট হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার এক প্রকল্পের আওতায় ওই স্কুলের ১৫৬ জন পড়ুয়া মিড ডে মিলে রুটি ও তরকারি খেয়েছিল শুক্রবার। মিড ডে মিল খাওয়ার পরে পড়ুয়াদের শরীরে অস্বস্তি শুরু হয়। অনেকেই অস্বস্তিতে শয্যাশায়ী হয়। কয়েক ঘণ্টা পরেই একাধিক পড়ুয়া অভিযোগ করে, তাদের পেটে যন্ত্রণা, ঘনঘন বমি ও মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যা হচ্ছে। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। 

    তড়িঘড়ি করে মেডিক্যাল টিম পৌঁছয় ওই স্কুলে। পড়ুয়াদের চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। এরপর একে একে ওই পড়ুয়াদের স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রায় অর্ধেকের বেশি পড়ুয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হতেই অন্যত্র স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। 

    রাতেই দৌসা জেলা হাসপাতালে ৪৯ জন পড়ুয়াকে স্থানান্তরিত করা হয়। তবে শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যে চিকিৎসকরা জানান, পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য বর্তমানে স্থিতিশীল। তাদের কারও শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক নেই। জেলা শাসক ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। মিড ডে মিলের খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেছেন খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা। বিষক্রিয়া প্রমাণিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। 

    স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ওই সবজি ও আটা দিয়ে বৃহস্পতিবারেও মিড ডে মিলে রান্না হয়েছিল। বৃহস্পতিবার কোনও পড়ুয়া অসুস্থ হয়নি। শুক্রবারের রুটি ও তরকারি দুই শিক্ষক খেয়ে পরীক্ষা করে নিয়েছিলেন। সেই দুই শিক্ষকের শরীরে কোনও বিষক্রিয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাঁরা সুস্থ আছেন। যদিও ঘটনাটি ঘিরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চলছে। 

    প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মিড ডে মিল খেয়ে বিপত্তি ঘটেছিল। আবারও মিড ডে মিল খেয়ে অসুস্থ অসংখ্য পড়ুয়া। এবার মিড ডে মিলে মরা গিরগিটি মেশানো ছিল বলে অভিযোগ। যা খেয়ে সরকারি স্কুলের বহু পড়ুয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অসুস্থদের মধ্যে ৬৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। 

    ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডে। দুমকা জেলার টোংরা এলাকায় একটি সরকারি স্কুলে মিড ডে মিলে মরা গিরগিটি মেশানোর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সেই মিড ডে মিল খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়ে স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা। পেটে যন্ত্রণা, ঘনঘন বমির মতো উপসর্গ ছিল সকলের। তড়িঘড়ি করে তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অসুস্থদের মধ্যে ৬৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। 

    প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অসুস্থ পড়ুয়াদের অভিযোগ, মিড ডে মিলের মধ্যে মরা গিরগিটি তারা দেখতে পেয়েছিল। সেটি খেয়েই অসুস্থ হয়ে পড়েছে তারা। হাসপাতালে ভর্তি ৬৫ জন খুদে পড়ুয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। টোংরা থানায় পুলিশ ঘটনার তদন্ত জারি রেখেছে। 

    স্কুলের মধ্যে নিম্নমানের মিড ডে মিল পরিবেশিত হওয়ায় অভিভাবকরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্কুলের মধ্যে খাবার খেয়ে এতজন পড়ুয়া অসুস্থ হওয়ার পর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। খুদে পড়ুয়াদের অসুস্থতার ঘটনায় ঝাড়খণ্ডে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 
  • Link to this news (আজকাল)