• দক্ষ কর্মীকে ছাঁটাই করার শাস্তি, চাকরি গেল দুই বসের
    আজকাল | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির দুনিয়ায় বেতন নিয়ে দর কষাকষি প্রায়ই জটিল হয়ে ওঠে। তবে এক সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের ক্ষেত্রে বিষয়টি এতটাই অদ্ভুত মোড় নিল। মাত্র ১০% বেতন বাড়ানোর অনুরোধ থেকে শুরু হওয়া ঘটনাপ্রবাহ শেষমেশ তার বসদের নিজেদের চাকরি হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

    এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার প্রায় ছয় বছর ধরে একটি সুপরিচিত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছিলেন। তিনি একাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকএন্ড সিস্টেম সামলাচ্ছিলেন যা ড্রপবক্সের ডেটা সিঙ্ক্রোনাইজেশনের মতো জটিল প্রযুক্তির সাথে তুলনা করা যায়। এত গুরুত্বপূর্ণ কাজ সত্ত্বেও তিনি জানতে পারেন, তার বেতন অন্যান্য সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারদের তুলনায় প্রায় ১০% কম।

    তখন তিনি নিজের বসের কাছে অনুরোধ জানান, যেন তার বেতন সহকর্মীদের সমান করা হয়। কিন্তু ম্যানেজমেন্ট সেই অনুরোধ নাকচ করে দেয়। ইঞ্জিনিয়ার পরে লিখেছিলেন, “তারা না বলায় আমিও কাজের ধরণ পাল্টে দিই। কম কাজ শুরু করি এবং নিজের ইচ্ছেমতো সময়ে কাজ করি, ‘কোর আওয়ার’-এর তোয়াক্কা করিনি।”

    অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার ম্যানেজারের জায়গায় নতুন এক ডিরেক্টর আসেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ারকে জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি নিয়মিত অফিস সময়ে কাজ করছেন না। ইঞ্জিনিয়ার বিষয়টি সোজাসুজি স্বীকার করেন এবং কারণ ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু এরপর যা ঘটল তা ছিল অবিশ্বাস্য। মাত্র এক মাসের মধ্যেই নতুন ডিরেক্টর তাকে ছাঁটাই করেন। কারণ হিসেবে জানানো হয়, কোম্পানির এইচআর সিস্টেমে তাকে ‘জব অ্যাব্যান্ডনমেন্ট’ কেস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

    ঘটনার এখানেই শেষ নয়। কিছুদিন আগে ওই ইঞ্জিনিয়ার তার প্রাক্তন সহকর্মীর সঙ্গে দেখা করেন। তখনই তিনি জানতে পারেন, তার ছাঁটাইয়ের পর কোম্পানিকে তার করা কাজ সামলাতে মোট ছয়জনকে নিয়োগ দিতে হয়েছে। অথচ তখনও তারা তাকে সার্ভারেন্স পে দিচ্ছিল। অর্থাৎ, একজনের বদলে সাতজনকে দিয়ে একই কাজ চালাতে হচ্ছে।

    এই বিপর্যয় শুধু অফিসে সীমাবদ্ধ থাকেনি। যিনি তাকে বরখাস্ত করেছিলেন সেই ডিরেক্টর, এমনকি যিনি ওই ডিরেক্টরকে নিয়োগ দিয়েছিলেন সেই ভাইস প্রেসিডেন্ট দুজনকেই কোম্পানি থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।

    প্রধান কারণ ছিল স্পষ্ট একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারকে না ধরে রাখার ভুল সিদ্ধান্ত কোম্পানিকে সময়, অর্থ এবং সুনামের বিশাল ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়। পরে ওই ইঞ্জিনিয়ার নিজের পোস্টে লিখেছিলেন, “সবকিছুই এড়ানো যেত, যদি তারা আমাকে ওই সামান্য ১০% বেতন বৃদ্ধি দিত।” শেষমেশ তিনি হাস্যরসের সুরেই যোগ করেন, “যাই হোক, আমার মনে হয় এতে প্রমাণ হয় যে পৃথিবীতে এখনও কিছুটা ন্যায়বিচার বাকি আছে। অন্তত আমি তো ব্যাপারটা ভেবে দারুণ মজা পেয়েছি!”
  • Link to this news (আজকাল)