এক পুরুষে সন্তুষ্ট না, আরও দুই যুবকের সঙ্গে ঘোরাঘুরি! বিবাহিত যুবতীকে বেঁধে বেধড়ক মারধর গ্রামবাসীদের, শিউরে ওঠা দৃশ্য এই রাজ্যে ...
আজকাল | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে সন্দেহ। তার জেরেই ভয়াবহ হেনস্থার শিকার হলেন এক যুবতী। দুই যুবকের সঙ্গে তাঁকে হাতেনাতে ধরেই আত্মীয়দের আশঙ্কা হয়েছিল, যুবতী হয়তো বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এই সন্দেহেই তিনজনকে বেধড়ক মারধর করা হয়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায়। ওই জেলার কয়েকজন গ্রামবাসী এক মহিলা ও দুই যুবককে ইলেক্ট্রিক পোলে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহ ভয়ঙ্কর হেনস্থার শিকার হন ওই মহিলা ও দুই যুবক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাশিপুর গ্রামের এক বিবাহিত যুবতী দুই যুবকের সঙ্গে বাইকে চেপে জশিপুর মার্কেটে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ফেরার পরেই পরিবারের সদস্যরা দেখেন বিবাহিত ওই যুবতী দুই যুবকের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করছেন। তার থেকেই অশান্তি শুরু হয়। যুবতীর পরিবারের সন্দেহ, ওই দুই যুবকের মধ্যে একজনের সঙ্গে বিবাহিত যুবতী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত রয়েছেন।
এরপরই তিনজনকে হাতেনাতে ধরে গ্রামবাসীরা একটি ইলেক্ট্রিক পোলে বেঁধে ফেলেন। দুই যুবক ও ওই বিবাহিত যুবতীকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। পথচলতি কয়েকজন লোক সেই মুহূর্তে ভিডিও করেন। জানা গেছে, ওই বিবাহিত যুবতীর দুই সন্তান রয়েছে। তাঁর কাকা ও কয়েকজন আত্মীয় যুবতীকে ওই যুবকদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল, যুবতী নিশ্চয়ই কারও সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এদিকে ওই দুই যুবক নাকি যুবতীর ভাইয়ের মতো ছিলেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকে উদ্ধার করে জশিপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। জানা গেছে, যুবতীর স্বামী ও এক যুবককে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে এই জেলাতেই এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায়। স্ত্রী ও শাশুড়িকে ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে খুন করে এক যুবক। এরপর বাড়ির বাগানে মাটি খুঁড়ে দেহগুলি পুঁতে দেয় সে। প্রমাণ লোপাটের জন্য সেই মাটিতেই কলাগাছ পুঁতে দেয়। মৃত তরুণীর নাম, সোনালী দালাল।ও তাঁর মায়ের নাম, সুমতি দালাল। অভিযুক্ত যুবকের নাম, দেবাশিস পাত্র।
খুনের নেপথ্যে কী কারণ, তা এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, দম্পতির মধ্যে কোনও একটি বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছিল। বিষয়টি যুবকের স্ত্রী তার মাকেও জানিয়েছিলেন। এরপরই বাপের বাড়িতে চলে আসেন সোনালী। কিন্তু বারবার স্বামীর সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর মা সুমতি। এরপর ১২ জুলাই স্বামীর কাছেই সোনালীকে নিয়ে যান তিনি। বিষয়টি মিটমাট করে আবারও একসঙ্গে থাকার জন্য অনুরোধ করেন।
গত ১৯ জুলাই রাতেও দম্পতির মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়েছিল। যার মধ্যে অংশ নিয়েছিলেন সোনালীর মা সুমতি। এই ঝামেলার পরেই চরম পদক্ষেপ করে যুবক। সেদিন রাতে সোনালী ও সুমতি একসঙ্গে এক ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সময় চুপিচুপি ঘরে ঢোকে দেবাশিস। ভারী পাথর দিয়ে দু'জনের মাথা থেতলে দেয় সে। খুনের পরে দেহ লোপাটের চেষ্টা করে।
নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সময়ে বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছিল। গভীর রাতে প্রতিবেশীরাও তাই চিৎকারের শব্দ শুনতে পাননি। সেই রাতেই বাড়ির পিছনের বাগানে দেহ দু'টি নিয়ে যায় দেবাশিস। এরপর বাগানের মাটি খুঁড়ে দেহগুলি পুঁতে দেয়। সেই মাটিতেই কলাগাছ পুঁতে দেয় সে। যাতে কারও সন্দেহ না হয়।
সেই রাতেই থানায় পৌঁছে নিখোঁজ ডায়েরি করে দেবাশিস। থানায় গিয়ে সে জানায়, বাড়িতে একমাত্র ছেলেকে রেখে সোনালী ও সুমতি ময়ূরভঞ্জ ছেড়ে চলে গেছেন। দিন কয়েক পুলিশ খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পায়নি দু'জনের। এরপর থেকে স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করছিল দেবাশিস। তাতেই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের।
সকলেই বাড়ির আশেপাশে উঁকি মারেন। তখনই বাগানটি নজরে পড়ে অনেকের। সেই বাগানেই মাটি খোঁড়া রয়েছে দেখতে পান কেউ কেউ। নতুন কলাগাছ পোঁতা রয়েছে, সেটিও অনেকের নজরে পড়ে। প্রতিবেশীরাই এরপর পুলিশে খবর দেন। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেবাশিসকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে তারা।
পুলিশি জেরায় কান্নায় ভেঙে পড়ে দেবাশিস। স্ত্রী ও শাশুড়িকে খুনের কথাও স্বীকার করে নেয় সে। এরপরই জানায়, কলাগাছের নীচেই রয়েছে তাঁদের দেহ। বাগানের মাটি খুঁড়ে সোনালী ও সুমতির পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর হাসপাতালে দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। ঘটনার মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে পুলিশ।