রহস্যমৃত্যুর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, আর জি করের ডাক্তারি পড়ুয়ার প্রেমিককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ ...
আজকাল | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়া অনিন্দিতা সোরেনের রহস্যমৃত্যু কাণ্ডে তাঁর প্রেমিক উজ্জ্বল সোরেনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। শনিবার সকালেই মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করার সময় অনিন্দিতার মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। কিছুক্ষণ পরেই ছাত্রীর মা প্রেমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতেই মালদহ থেকে অভিযুক্ত উজ্জ্বলকে আটক করেছে পুলিশ। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত উজ্জ্বল সোরেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রবিবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পরিবারের তরফে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়, বিষক্রিয়ার জেরেই অনিন্দিতার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে পুলিশ। কীভাবে অনিন্দিতার শরীরে বিষক্রিয়া হল, কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বিষ খাইয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই প্রেমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তারা। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তারি পড়ুয়ার মৃত্যু হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মৃতার প্রেমিকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলে পরিবার। অভিযুক্ত মালদহ মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে এমবিবিএস-এর ছাত্র। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে ইংরেজ বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত উজ্জ্বল সরেন বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, মৃত এমবিবিএস-এর ছাত্রী অনিন্দিতা সরেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে এমবিবিএস পড়ছিলেন। মৃতা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের বাসিন্দা ছিলেন। অভিযুক্ত প্রেমিক উজ্জ্বলের বাড়ি পুরুলিয়াতে।
জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের একসঙ্গে দেখা যেত। প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে অনিন্দিতা মালদহ এসেছিলেন। এরপর আচমকাই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সঠিক চিকিৎসা হয়নি বলে পরিবারের দাবি। ঘটনার পর থেকেই উজ্জ্বল বেপাত্তা। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং পাশাপাশি তদন্ত শুরু করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।
মৃতার মা বলেন, 'আমাদের জানানো হয় আমার মেয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি রয়েছে। এসে দেখি তার মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা উঠছে। এরপর ওকে কলকাতায় 'রেফার' করে দেওয়া হয়। কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই সুজাপুরের কাছে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়। আমি নিজে ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ করেছি। এই ঘটনার তদন্ত চাই এবং অভিযুক্তের শাস্তি চাই।'
তাঁর অভিযোগ, 'দুজনের মধ্যে খুব গন্ডগোল ছিল। আমার মেয়ে সামাজিক বিয়ের জন্য প্রস্তাব দিয়েছিল। ছেলেটি রাজি হয়নি। এই জন্যই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকা সত্ত্বেও মেয়ে চিকিৎসা পায়নি। এক বছর ধরে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল দু'জনের মধ্যে। ওরা বিয়ে করেছিল মন্দিরে। কিন্তু আমার মেয়ে সামাজিকভাবে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেই কারণে মানসিক অত্যাচার করত ছেলেটি। আমার মেয়ের মোবাইলে আজেবাজে মেসেজ করত।'
এই বিষয়ে উজ্জ্বল সরেনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'আগে উকিলের সঙ্গে কথা বলব। তারপর যা বলার সংবাদমাধ্যমে বলব।' এই ঘটনা নিয়ে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ প্রসেনজিৎ বর বলেন, 'ঘটনা জানা নেই। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে তারপর বলতে পারব।'