স্টাফ রিপোর্টার: গোপাল পাঁঠার বিকৃতির এক অপচেষ্টার পরিবেশে নতুন করে উপস্থাপিত হল গোপাল মুখোপাধ্যায়ের জীবনী গ্রন্থ। স্পষ্ট হল, তিনি হিন্দু মহাসভার সদস্য ছিলেন না, বামপন্থার পথিকও ছিলেন না। তিনি ছিলেন দক্ষিণা কালীর উপাসক। হিন্দু জনতাকে বাঁচাতে তিনি মুসলমান দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রয়োগ করেছেন, কিন্তু মুসলমান বিদ্বেষে নিজেকে জারিত করেননি কখনও।
বস্তুত বিবেক-বিকৃতি নয়, সত্যিকারের গোপাল পাঁঠাকে চেনাতেই ‘গোপাল পাঁঠা’ বইটি লিখলেন দেবাশিস পাঠক। এই গ্রন্থ লেখার প্রেক্ষিতে তিনি বেশি মানানসই। তাঁর স্ত্রী বউবাজারের বিখ্যাত ভীমচন্দ্র নাগ পরিবারের সদস্যা। দেবাশিসের বিয়েতে বর্ধিষ্ণু নাগ পরিবারের আমন্ত্রণে এসেছিলেন এলাকার বর্ধিষ্ণু মুখোপাধ্যায় পরিবারের গোপাল। সেই অর্থে দেবাশিস গোপাল জেঠা বলতেন। লেখক জানালেন, তাঁর এই গ্রন্থ লেখার তাগিদ জুগিয়েছেন বিতর্ক তৈরি করে জনপ্রিয়তা ‘কিনতে’ অভ্যস্ত বিবেক অগ্নিহোত্রী নামে এক পরিচালক। শনিবার বউবাজারে বাঙালি পাঁঠার দোকানের সামনে প্রকাশ পেল নতুন বই। ছিলেন প্রকাশনা সংস্থা ‘সূত্রধর’-এর সুমন ভৌমিক।
গোপাল মুখোপাধ্যায়ের পাঁঠার দোকান ছিল। সেই কারণেই তাঁর নামকরণে পরিচিতি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এদিনই জাতীয় গ্রন্থাগারে ‘দ্য বেঙ্গল ফাইলস’-এর আমন্ত্রণমূলক শো করেছে বিজেপি ঘনিষ্ঠদের ‘খোলা হাওয়া’। বিতর্ক তৈরি করেও বাংলা শুধু নয়, সারা দেশেই যে সিনেমা গ্রহণ করেননি মানুষ। গোপাল পাঁঠাকে দাঙ্গাকারী হিসাবে দেখানোয় বিরোধিতা সব স্তরে। লেখক বলছেন, কালের প্রয়োজনে সময়ের নির্মাণে গোপাল পাঁঠা তৈরি হয়েছেন, তিনি মস্তানও নন মসিহাও নন। আসলে গোপাল রডা অস্ত্র মামলার অন্যতম রাজবন্দি অনুকূল মুখোপাধ্যায়ের ভাইপো যিনি আর্ত মানুষের সাহায্যে সর্বদা এগিয়ে আসেন।
আসলে দি গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংয়ে তিনিই চাঁদনি চকে মেসে থাকা মুসলমানদের বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন। প্রতিহত করেছিলেন দাঙ্গাবাজদের। কিন্তু বিকৃত তথ্যে বিকৃতি ঘটানো হচ্ছে ইতিহাসের। আক্ষেপ করে দেবাশিস নিজেই ভূমিকায় লিখেছেন, ‘এই জীবন ইতিহাস কোনও মরশুমি ফুল নয়, যা সাম্প্রতিক বিতর্কের প্রতিবেশে নিছক অর্থ উপার্জনের প্রসৃতি ঘটাবে।’