'ওটা আমার বাবা নয়, মায়ের প্রেমিক', বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা রটিয়ে দিয়েছিল ৫ বছরের মেয়ে, মায়ের কাণ্ডে শিউরে উঠল পুলিশ
আজকাল | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে পথের কাঁটা স্বামী নয়, শিশু কন্যাসন্তান। প্রেমের মাঝে একমাত্র বাধা ছিল সে। তাই নিত্যদিন মা ও তাঁর প্রেমিক মিলে শারীরিক নির্যাতন করতেন পাঁচ বছরের মেয়েকে। মারতে মারতে অচৈতন্য করে দিতেন। এবার মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করতে নদীতে দেহ ছুড়ে ফেললেন মা ও তাঁর প্রেমিক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের হাভেরিতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রানেবেন্নুর তালুকে। শনিবার হাভেরির পুলিশ আধিকারিক যশোদা ভান্তাগোদি জানিয়েছেন, আন্নাপ্পা ও জ্যোতি গত ২ আগস্ট পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে তুমুল শারীরিক নির্যাতন করেন। বেধড়ক মারধর করা হয় শিশুকন্যাকে। এরপর জীবিত অবস্থায় শিশুকন্যার দেহটি ছুড়ে ফেলেন তুঙ্গভদ্রা নদীতে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কয়েক বছর আগে মঞ্জুনাথের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জ্যোতির। তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। হোটেল কাজ করতেন জ্যোতি। সেখানেই আন্নাপ্পার সঙ্গে আলাপ হয়। ক্রমেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কটি গড়ে ওঠে। সেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের টানে স্বামী ও দুই সন্তানকে ফেলে রেখে শুধুমাত্র ছোট মেয়েকে নিয়েই আন্নাপ্পার সঙ্গে থাকতে চলে যান জ্যোতি।
মেয়েকে নিয়ে জ্যোতি ও আন্নাপ্পা গুড্ডাদা আনভেরিতে থাকতেন। হঠাৎ জ্যোতি ও আন্নাপ্পা জানতে পারেন, প্রতিবেশীদের এই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানিয়ে দিয়েছে শিশুকন্যা। তার মুখ থেকেই সম্পর্কের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপরই শুরু হয় অত্যাচার।
পাঁচ বছরের শিশুকন্যার হাত, পা বেঁধে মারধর শুরু করেন। এরপর ফুটন্ত জল মুখে ছুড়ে মারেন। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকলেও, মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি জ্যোতি। তাঁদের ধারণা ছিল, হাসপাতালে এই অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে গেলেই আরও ভোগান্তি পোহাতে হবে তাঁদের। দগ্ধ অবস্থায় মেয়েকে বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন দু'দিন। এরপর ওই অবস্থাতেই মেয়েকে তুঙ্গভদ্রা নদীতে ছুড়ে ফেলেন।
গত ৮ আগস্ট নদীর তীরে শিশুকন্যার দেহ ভেসে ওঠে। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। অন্যদিকে মঞ্জুনাথ জ্যোতি ও আন্নাপ্পার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে দায়ের করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে নিজের কন্যাসন্তানকে খুন করে আরও এক মা। ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার মেদাক জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মার্চ মাসেই ২৩ বছর বয়সি তরুণী তার প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। তারপর কয়েক সপ্তাহ পরেই নিজের বাড়িতে ফিরে আসে। শ্বশুরবাড়িতে আসতে স্বামীই তাকে নিষেধ করেছিল। শুধুমাত্র এই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে।
এরপর গত মে মাসে বাড়িতে বাবা, মায়ের কাছে পাঁচ বছরের ছেলেকে রেখে আবারও সে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। তখনই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তরুণীর বাবা। অভিযোগের ভিত্তিতে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে তরুণী ও তার প্রেমিককে মেদাক জেলায় ফিরিয়ে আনে পুলিশ। তখনই খুদে কন্যাসন্তানকে খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয় সে।
তরুণী জানিয়েছে, তার সম্পর্কের মধ্যে পথের কাঁটা ছিল একমাত্র এই দুই বছরের শিশুকন্যা। তাই তাকে খুন করে সে। খুনের পর দেহটি মাটির তলায় পুঁতে দেয়। গ্রামেই শিশুকন্যাকে পুঁতে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল সে। এই ঘটনার পরেই তরুণীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার প্রেমিকের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করেছে তারা। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে।