'তোমাকে আর কষ্ট দিতে চাই না', সন্তানের অসুস্থতায় কাতর, স্বামীকে চিঠি লিখে ছেলেকে নিয়েই মরণঝাঁপ মায়ের
আজকাল | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: এগারো বছরের সন্তান। অসুস্থ। সন্তানের অসুস্থতায় কাতর মা চিঠি লিখলেন স্বামীকে। লিখলেন, যে পদক্ষেপ তিনি নিতে চলেছেন, তার জন্য দুঃখিত। লিখলেন, এই সারাক্ষণের মানসিক যন্ত্রণা, চাপ থেকে মুক্তি দিতেই সিদ্ধান্ত। তারপরেই নাবালক ছেলেকে নিয়ে ফ্ল্যাটের চোদ্দ তলা থেকে মরণঝাঁপ মায়ের। গ্রেটার নয়ডার ঘটনায় শোকে কাতর গোটা এলাকা।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলার নাম সাক্ষী চাওলা। বয়স ৩৭। গ্রেটার নয়ডার ওই আবাসনে স্বামী দর্পণ এবং ছেলে দক্ষের সঙ্গে থাকতেন। জানা যায়, দম্পতির একমাত্র সন্তানের বয়স এগারো। বিগত বহু বছর ধরেই সন্তানের মানসিক অসুস্থতার চিকিৎসা চলছিল। তবে সময় যত এগোচ্ছিল, ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন সাক্ষী। তাঁর মৃত্যুর পরে পড়শিদের বয়ানেও ঘুরে ফিরে উঠে আসছে এই তথ্য।
সাক্ষীর স্বামী দর্পণ, পেশায় সিএ। ঘটনার দিনে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই মুহূর্তে তিনি একটি অন্য ঘরে ছিলেন এবং আচমকাই বিকট শব্দ শুনতে পান। তৎক্ষণাৎ ব্যালকনিতে ছুটে গেলে, তিনি দেখেন নীচে মাটিতে রক্তের মাঝে পড়ে স্ত্রী-সন্তানের দেহ।
খবর দেন পুলিশে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহ দুটি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় নিকটবর্তী হাসপাতালে। তদন্তে নেমে তাঁদের বাড়ি থেকেই ওই চিঠি উদ্ধার হয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, সাক্ষী স্বামীকে উদ্দেশ করে চিঠি লিখে গিয়েছেন। তাতে লিখেছেন, 'আমরা এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি... দুঃখিত। আমরা তোমাকে আর কষ্ট দিতে চাই না। আমাদের কারণে তোমার জীবন নষ্ট হওয়া উচিত নয়। আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।'
অন্যদিকে ভয়াবহ এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গিয়েছে এই রাজ্যের মুর্শিদাবাদে। শনিবার গভীর রাতে সায়মা যখন তার দুই ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন সেই সময় কোনও কারণে শর্ট সার্কিট থেকে ঘরে আগুন লেগে যায়। কোনওক্রমে সায়মা ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেও অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘরের মধ্যেই মৃত্যু হয় হয় সাহিল, আদিল এবং সাজিদার। গ্রামের বাসিন্দারা আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পেয়ে টিউবয়েল এবং পদ্মা নদী থেকে জল নিয়ে এসে কোনওক্রমে আগুন নেভান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনীপুর-ভাঙ্গনপাড়া এলাকায় অতি সম্প্রতি নতুন করে একটি জনবসতি গড়ে উঠেছে। এই গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই একসময়ে আখরিগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। কিন্তু সেখানে পদ্মা নদীর ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বেশিরভাগ বাড়ি বর্তমানে নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। সেখান থেকে উদ্বাস্তু হয়ে বর্তমানে বেশ কিছু পরিবার বেনীপুর-ভাঙ্গনপাড়া এলাকায় এসে পদ্মা নদীর একটি শাখার ধারে নতুন করে বসতি স্থাপন করেছে।
নতুন এই গ্রামটির জন্য ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন এবং পঞ্চায়েতের তরফ থেকে এলাকায় পাকা রাস্তা এবং বিদ্যুতের ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়েছে। বেলাল শেখ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, 'শনিবার রাতে যখন সাইমা তার ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সময় শর্ট সার্কিট থেকে ওই বাড়িতে আগুন ধরে যায়। বাড়িটির মেঝে থেকে ভিত পর্যন্ত পাকা হলেও পরবর্তী অংশ পাটকাঠি এবং টিনের তৈরি।'
গ্রামবাসীরা বলেন, আগুনে স্ফুলিঙ্গ থেকে পাটকাঠিতে আগুন ধরে যায়। এরপর সাইমার ছেলেমেয়েরা যেখানে ঘুমিয়ে ছিল, সেখানে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে।