রান্নাঘরের সিলিং-এ ওটা কী? ভয়ে জড়সড় পরিবারের সদস্যরা! এরপর যা হল শুনলে চোখ ছানাবড়া ...
আজকাল | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: নয়ডায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর কাহিনি। একটি বাড়িতে এক প্রকাণ্ড সাপ ঢুকে পড়ে। পরিবারের সদস্যেরা রান্নাঘরের সিলিং লাইটের ভেতরে একটি কোবরা সাপ দেখতে পেয়ে আতঙ্কে জড়সড় হয়ে যায়। সেক্টর ৫১-এ এই ঘটনায় মুহূর্তে বাড়িময় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে পরিবারের সদস্যরা এটি একটি ইলেক্ট্রিক তার ভেবেছিল। কিন্তু পরে যখন তা নড়াচড়া শুরু করে, তখন সকলের চক্ষু চড়কগাছ। ভয়ে কোনওরকমে নিজেদের বাঁচিয়ে সকলে মিলে উপরের তলায় নিজেদের ঘরে তালাবন্ধ করে রাখেন। এমনকী রান্না বন্ধ করে দেন।
ঘটনার পর, পরিবারটি সঙ্গে সঙ্গে বন দপ্তরকে খবর দেয়। খবর পেয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তারা ও একজন পেশাদার সাপ ধরার লোক এসে বাড়িতে অভিযান শুরু করেন। এই প্রক্রিয়া প্রায় কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে। অবশেষে সিলিং-এ একধরনের বিশেষ গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে এরপরই লুকিয়ে থাকা সাপটি তরতর করে বাইরে বেরিয়ে আসে। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা আতঙ্কে কাটানোর পর, বুধবার সন্ধ্যায় গৌতম বুদ্ধ নগর বন দপ্তর সফলভাবে সাপটিকে উদ্ধার করে। রান্নাঘরের সিলিং এ থাকা ওই কোবরা সাপটির ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার জেরে অনেকেই বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোবরা সাপটিকে নিরাপদে ওখলা বার্ড স্যাংচুয়ারিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে আরও কোনও সাপের উপস্থিতি ছিল কিনা খতিয়ে দেখা হয়েছে তা'ও।
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশেরই বালরামপুর জেলা থেকে আরও একটি মর্মান্তিক ঘটনার খবর পাওয়া গিয়েছে। খবর অনুযায়ী, সেখানকার একটি পরিবারে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী এবং তার ৮ বছর বয়সী ভাই সাপের কামড়ে মারা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, দুই ভাই বোন তাদের বাড়ির ছাদে ঘুমিয়ে ছিল। ঠিক তখনই এক বিষধর সাপ এসে তাদের কামড়ে দেয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট হেমন্ত গুপ্ত জানিয়েছেন, মৃত শিশুদের নাম শিভানি এবং শুভম। বুধবার ভোররাতে তারা সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই দুই ভাই বোনের মৃত্যু হয়।
পরপর এই দুই নির্মম ঘটনা ঘিরে একদিকে যেমন জনমনে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তেমনই অন্যদিকে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে সাপের প্রবেশ এবং গ্রামীণ এলাকায় শিশুদের মৃত্যুর মতো ঘটনা সকলকে নিরাপত্তা ও সজাগ থাকার বার্তা দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এলো নাবালক। জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলার বেথুয়াডহরি এলাকার বাসিন্দা ৯ বছরের এক নাবালক রাতে শৌচকর্মের জন্য বাড়ির বাইরে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে আসার পর থেকেই তাঁর পেটে প্রবল ব্যথা শুরু হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ওই এলাকায় সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটায়, চিকিৎসকরা প্রথমেই সাপের কামড়ের আশঙ্কা করেন। নাবালকের পরিবার জানায়, ছেলেটির চোখের পাতা ঝুলে পড়া এবং শরীর ঢিলে হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে।
ফলে ধীরে ধীরে সে আরও দুর্বল হয়ে পরে। তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর প্রাথমিক পরীক্ষায় সাপের কামড়ের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, এবং সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে অ্যান্টিভেনম (সাপের বিষের প্রতিষেধক) দেওয়া হয়, কিন্তু অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই নাবালককে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। কিন্তু ভর্তি হওয়ার মত পরিস্থিতি এবং বেড না পাওয়ার কারণে একাধিক হাসপাতাল ঘুরে অবশেষে গুরুতর অবস্থায় তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ছেলেটির শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে, এবং তাঁর শ্বাসতন্ত্রের পেশিগুলি প্যারালাইজড হয়ে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন পিয়ারলেস হাসপাতালে চিকিৎসকরা।
এরপর তাঁকে তৎক্ষণাৎ পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা শুরু করা হয় এবং ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে কৃত্রিম শ্বাস দেওয়া শুরু হয়। নাবালককে ভর্তি করানো হয় হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর চিকিৎসক সংযুক্তা দে-এর অধীনে। জানা গিয়েছে, ওই নাবালকের শরীরে দুটি ক্ষুদ্র সাপের কামড়ের চিহ্ন পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী এটি একটি নিউরোটক্সিক সাপের কামড়, যা একসঙ্গে মায়োটক্সিসিটি-ও সৃষ্টি করে — অর্থাৎ এটি নার্ভ ও মাংসপেশি উভয়কেই আক্রান্ত করে। এই ধরণের সাপের কামড়ে পুরো শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে এবং এটি জীবননাশক হতে পারে বলে জানান, চিকিৎসক সংযুক্তা দে। শুধু তাই নয়, ছেলেটির রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া এবং রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাঁকে রক্ত ও অন্যান্য উপাদান ট্রান্সফিউশন করতে হয়।