• পরীক্ষার আগের রাতে মৃত্যু পাঁশকুড়ার চাকরিহারা শিক্ষক সন্তোষ মণ্ডলের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • এসএলএসটি একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসতে পারলেন না পাঁশকুড়ার চাকরিহারা শিক্ষক সন্তোষ মণ্ডল। অসুস্থতা নিয়ে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। শনিবার রাতে মৃত্যু হয় সন্তোষ মণ্ডলের। মৃতের পরিবারের দাবি, চাকরি হারানোর পর থেকে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সন্তোষ।

    এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর স্কুল সার্ভিস কমিশন আয়োজিত নবম-দশমের নিয়োগের পরীক্ষা দেন সন্তোষ। বৃহস্পতিবার আচমকা অসহ্য পেটের যন্ত্রণা শুরু হয়। পাঁশকুড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয় সন্তোষকে। অবস্থা সঙ্কটজনক হওয়ায় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই শনিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর।

    রসায়নের শিক্ষক ছিলেন সন্তোষ মণ্ডল। তাঁর আদি বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার খাজুরি গ্রামে। ২০১৬ সালে এসএলএসটি পরীক্ষা দিয়ে পাঁশকুড়ার আড়িশান্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ে চাকরি পান। চাকরি পাওয়ার পর পাঁশকুড়ার মেচগ্রামে বাড়ির জায়গা কেনেন। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরি করে মেচগ্রামেই থাকতেন সন্তোষ।

    সেই কারণে তাঁর মাথায় ছিল কয়েক লক্ষ টাকার লোনের বোঝা। দিনরাত এক করে টিউশনি করতেন সন্তোষ মণ্ডল। পাশাপাশি রাতের পর রাত জেগে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি ডাক্তারকে বারবার বলেছিলেন রবিবার তিনি এসএসসি পরীক্ষা দেবেন।

    পরীক্ষার সেন্টার পড়েছিল পাঁশকুড়া বালিকা বিদ্যালয়ে। কিন্তু পরীক্ষার আগেই সব আশা শেষ হয়ে গেল সন্তোষের। এর আগে গত মাসে ঝাড়গ্রামে আরেক চাকরিহারা শিক্ষক সুবল সোরেনের মৃত্যু হয়েছিল। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। সেই ক্ষেত্রেও উঠেছিল মানসিক অবসাদের প্রসঙ্গ।

    ডেবরার বাসিন্দা হলেও কলকাতার রাজপথে প্রায় সব আন্দোলনেই থাকতেন সুবল। আন্দোলনকারীদের দাবি, ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের সক্রিয় সদস্য ছিলেন সুবল। ডেবরা থেকে ধামসা, মাদল নিয়ে চলে আসতেন আন্দোলনের মঞ্চে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)