• ফের জোট জল্পনা, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি নওশাদের
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ফের জোট গঠনের জল্পনা উসকে দিলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) একমাত্র বিধায়ক তথা দলের চেয়ারম্যান নওশাদ সিদ্দিকি। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি পাঠিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে জোটের সম্ভাবনার দরজা খুলে দিলেন তিনি। আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে ইমেল মারফত পাঠানো এই চিঠি রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। যদিও চিঠিতে ঠিক কী লিখেছেন, সেই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ নওশাদ। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বামফ্রন্টের সঙ্গে ফের জোটবদ্ধ ভাবে লড়াই করার প্রস্তাবই দিয়েছেন তিনি।

    ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও আইএসএফ সংযুক্ত মোর্চা গঠন করে লড়াই করেছিল। তবে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, গোটা রাজ্যে মাত্র একটি আসন জয় করে আইএসএফ। ভাঙড় থেকে জিতেছিলেন নওশাদ নিজে। পরবর্তী সময়ে উপনির্বাচন ও লোকসভা ভোটে বাম ও কংগ্রেস একসঙ্গে লড়লেও, আইএসএফ সেই জোট থেকে দূরেই ছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এককভাবে লড়ে হতাশাজনক ফল করে নওশাদের দল। সেই ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা থেকেই এবার পুরনো শরিকদের সঙ্গে আবারও হাতে হাত মেলাতে চাইছে ভাইজানের দল।

    চিঠি প্রসঙ্গে নওশাদ জানিয়েছেন, ইমেল পাঠালেও বিমান বসু এখনও সেটি হাতে পাননি বলে জানানো হয়েছে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই নিজে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে গিয়ে বিমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চিঠিটি সরাসরি তাঁর হাতে তুলে দেবেন। সেই সঙ্গে মৌখিকভাবে আইএসএফের রাজনৈতিক অবস্থান ও ভাবনার কথাও জানাবেন তিনি। শুধু বামফ্রন্ট নয়, কংগ্রেসের সঙ্গেও ফের সমঝোতার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি। খুব শিগগিরই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারকেও লিখিত প্রস্তাব পাঠাতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে।

    বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্ভাব্য জোটের মূল লক্ষ্য হবে রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধার। বর্তমানে রাজ্য বিধানসভায় কংগ্রেস ও বামেদের কোনও বিধায়ক না থাকলেও, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা এখনও যথেষ্ট। সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে মালদহ দক্ষিণে জয় ছাড়াও, উত্তরবঙ্গ ও মুর্শিদাবাদের একাধিক কেন্দ্রে ভালো ভোট পেয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থীরা।

    অন্যদিকে, দক্ষিণবঙ্গের হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো জেলাগুলিতে আইএসএফ তথা ফুরফুরা শরিফের প্রভাব এখনও প্রাসঙ্গিক। এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র বিধায়ক হিসেবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক আলোচনার প্রথম ধাপ এগিয়ে রাখলেন নওশাদ সিদ্দিকি। আলিমুদ্দিন ও বিধান ভবন কীভাবে তাঁর প্রস্তাবের প্রতি সাড়া দেয়, সেদিকেই এখন নজর রাজনৈতিক মহলের। একইসঙ্গে, ২০২৬-র নির্বাচনের আগে রাজ্যে তৃতীয় বিকল্প শক্তির সম্ভাব্য চেহারা নিয়েও শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)