খড়্গপুরে বিজেপির কাউন্সিলর ও নেতার মারামারি, ভাইরাল ভিডিও
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর শহরে প্রকাশ্যে দলীয় কার্যালয়ে বিজেপি নেতাকে জুতোপেটা! তোলাবাজির অভিযোগ ঘিরে বিজেপির এক নেত্রী ও নেতার হাতাহাতির ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর মমতা দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রকাশ্যেই সক্রিয় বিজেপি নেতা অশোক সিংহকে জুতো মেরে অপমান করেছেন। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার। ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, প্রথমে অশোক বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করে জুতো হাতে নিয়ে দু’বার আঘাত করেন কাউন্সিলর মমতা। ক্ষুব্ধ অশোকও জুতো খুলে পাল্টা আক্রমণ করতে উদ্যত হলেও ক্যামেরা টের পেয়ে থেমে যান। তাঁকে বলতে শোনা যায়— ‘দেখুন সবাই, কীভাবে চপ্পল দিয়ে আমাকে মারা হচ্ছে। এখনই পুলিশকে ডাকব।’ জবাবে কাউন্সিলর মমতার সাফ কথা, ‘প্রয়োজনে আবারও মারব, আমি তোর মতো চোর নই।’
অভিযোগ অনুযায়ী, এলাকার এক বাসিন্দা রাস্তার ধারে দোকান বসানোর অনুমতি চাইলে মমতা তাঁর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। অশোক এর প্রতিবাদ করায় উত্তেজনা বাড়ে। অশোকের দাবি, ‘আমি ২০২২ সালে ওঁকে জিতিয়ে এনেছিলাম। এখন উনি নিজেকে অনেক বড় ভাবেন। টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় এভাবে আক্রমণ করেছেন।’ অশোক জানিয়েছেন, তিনি কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।
এদিকে, মমতার পাল্টা অভিযোগ অশোকের দিকেই। তাঁর দাবি, অশোক আগে তাঁর গায়ে হাত তুলেছেন, অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। সেই কারণেই পাল্টা তিনি জুতো হাতে তুলেছেন। মমতার কটাক্ষ, ‘অশোক কোনও রাজনৈতিক দলেরই লোক নয়, সমাজবিরোধী। বিজেপি হোক বা তৃণমূল— কোনও দলই ওকে মানে না।’
ঘটনার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তি বেড়েছে জেলা বিজেপি নেতৃত্বের মধ্যে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির অন্যতম নেতা অরূপ দাস বলেন, ‘আমরা শৃঙ্খলাবদ্ধ দল, এমন ঘটনা একেবারেই মানা যায় না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা কটাক্ষ করে বলেন, ‘অশোক নিজেই তোলাবাজ। ওঁদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কী গোলমাল হয়েছে জানি না, তবে বিজেপির এই কাণ্ডকারখানা নতুন নয়।’