• চাকরি যাওয়ার পর থেকেই ভালো করে খেতেন না-ঘুমাতেন না, শেষপর্যন্ত SSC-তে বসাও হল না কাজহারা শিক্ষকের
    ২৪ ঘন্টা | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • কিরণ মান্না: আদালতের রায়ে চাকরি গিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুরের শিক্ষক সন্তোষ কুমার মণ্ডলের। চাকরি হরিয়ে মানসিক অবসাদ ভুগছিলেন। শেষপর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষার আগে প্রাণটাও চলে গেল। আজ ছিল এসএসসির একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা। তার আগে গতরাতে আচমকাই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল সন্তোষবাবুর।

    পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের আড়িশান্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন সন্তোষ কুমার মণ্ডল। পরিবারের দাবি, ২০১৬ সালের প্যানেলের চাকরি চলে যাওয়ার পর থেকেই ভেঙে পড়েছিলেন সন্তোষবাবু। সংসার চালাতে টিউশানি শুরু করতেন। পাশাপাশি রাত জেগে পড়াশোনাও শুরু করেছিলেন। গত সপ্তাহে নবম-দ্শম শ্রেণির পরীক্ষায় বসেন। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার জন্য। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার হঠাত্ই অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্তোষ।  প্রথমে তাঁকে মেচগ্রাম ও পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। চাকরি হারানোর চাপেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন সন্তোষ। এমনটাই দাবি করছেন পরিবারের লোকজন।

    সন্তোষবাবুর স্ত্রী বলেন, উনি ২০১৬ সালের প্যানেলের ক্যান্ডিডেট ছিলেন। একশোর মধ্যে জায়গা ছিল। বাড়ি থেকে ১০ মিনিট দূরে চাকরি করতেন। আমরা একটা অন্যায়ের শিকার হয়ে গেলাম। চাকরি যাওয়ার পর ডিপ্রেশনে চলে যান। ঘুমাতেন না, খাওয়াদাওয়া করতেন না। অনেক বোঝাতাম ওঁকে। পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রচুর চেষ্টা করছিলেন। ডাক্তারকেও বলেছিলেন, ছেড়ে দিন পরীক্ষা দিয়ে আসব। 

    প্রতিবেশী অঙ্কুশ অধিকারী বলেন, ওঁর শরীর বেশকিছুদিন ধরেই খারাপ ছিল। ওঁকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাই তখন ওঁর অবস্থা খুবই খরাপ ছিল। লাং-এ জল জমেছিল, বিপি কমে গিয়েছিল। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করা হয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত ওঁকে বাঁচানো যায়নি। পরীক্ষা নিয়ে টেনশনে ছিলেন। পেটে ব্যাথা-বমি ছিল। ডাক্তাররা বলেছেন ওঁর লার্জ ইন্টেসটিন ব্লাস্ট হয়ে গিয়েছিল। পেটের মধ্যে অনেকগুলো টিউমার ছিল। যখন থেকে চাকরি চলেগিয়েছিল তখন থেকে ভালো করে খেতেন না। বাড়ির বাইরে বের হতেন না ভালো করে। হাসপাতালে যতক্ষণ জ্ঞান ছিল ততক্ষণই পরীক্ষার কথা বলেছিলেন।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)