• নির্মলা, নাড্ডার মতো সাংসদদেরও প্রাপ্য আটকে রেখেছে মোদি সরকার
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি: সোনিয়া, খাড়্গে, ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতো বিরোধী নেতাই শুধু নয়, দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার মতো বিজেপির রাজ্যসভার সদস্যদেরও  প্রাপ্য‌ আটকে রেখেছে মোদি সরকার। চাইতে গেলেই বলা হচ্ছে ‘ফান্ড নেই।’ প্রায় ৩৩ কোটি টাকা বকেয়া মেটানো বাকি। স্রেফ সাংসদই নয়। তাঁদের ব্যক্তিগত সহকারীদের (পিএ) টাকাও দিচ্ছে না সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক। সরকারের এই অবস্থানে জহর সরকার সহ ২০২৩ সালের পর যেসব সাংসদ অবসর নিয়েছেন, তাঁদেরও বকেয়া আটকে। 

    ফান্ড নেই বলে রাজ্যসভার সচিবালয় সময় দীর্ঘায়িত করলেও লোকসভার সদস্যরা কিন্তু গত দু মাস আগেই বকেয়া পেয়ে গিয়েছেন। তাই রাজ্য‌সভার সদস্য এবং তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীদের বকেয়ার অর্থ আটকে রাখা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। গত দু’বছরের বকেয়া হিসেবে এক একজন সাংসদ পাবেন ১১ লক্ষ ৪ হাজার টাকা। ব্যক্তিগত সহকারীরা পাবেন ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৩২ কোটি ৯২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। তাই রাজ্যসভার নতুন চেয়ারম্যান দেশের উপরাষ্ট্রপতি সি পি রাধাকৃষ্ণনের সামনে এটিও একটি পরীক্ষাও। কত দ্রুত তিনি তাঁর সভার সদস্যদের বকেয়া মেটাতে সাহায্য করতে পারেন। 

    সম্প্রতি সাংসদদের বেতন বেড়েছে ২৪ শতাংশ।  স্রেফ বেতন হয়েছে মাসে ১ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা। এছাড়া সংসদীয় ক্ষেত্র ভাতা এবং অফিস ভাতা মিলিয়ে আগে যেখানে মাসে প্রত্যেক সাংসদের স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার অ্যাকাউন্টে পৌঁছত ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা, এখন তা ২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে বেড়েছে ৪৬ হাজার টাকা। 

    বর্ধিত বেতনের ঘোষণায় সরকার জানিয়েছিল, কার্যকর হবে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে। চলতি (২০২৫ সালের) এপ্রিল থেকে বর্ধিত অর্থ মিললেও দু বছরের বকেয়া (এরিয়ার) বাকি। সাংসদের পিএ’রা পান মাসে ৫০ হাজার টাকা। আগে পেতেন ৪০ হাজার। একজন সাংসদ সর্বোচ্চ চারজন পর্যন্ত ব্যক্তিগত সহকারী রাখতে পারেন। যদিও মিলবে মোট ওই ৫০ হাজারই। সেই হিসেবে সহকারীদের বাড়ল প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা। রাজ্যসভার সাংসদের সংখ্যা ২৪৫। ফলে হিসেব কষলেই দেখা যাচ্ছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা বকেয়া মেটাচ্ছে না মোদি সরকার। কবে মিলবে? মিলছে না স্পষ্ট উত্তর। 

    এরই মধ্যে উপরাষ্ট্রপতি সি পি রাধাকৃষ্ণনের সচিব হিসেবে রবিবার নিযুক্ত হলেন প্রাক্তন আমলা অমিত খারে। তিন বছরের জন্য তাঁকে চুক্তি ভিক্তিক নিয়োগ করা হয়েছে। নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলেই তিনি পরিচিত। ২০১৮ সালে প্রথমে যোগ দেন তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের সচিব হিসেবে। সেখান থেকে শিক্ষামন্ত্রকের সচিব। অবসরের পর ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা। ঝাড়খণ্ড ক্যাডারের এ‌ই আইএএস বিহারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবের পশু খাদ্য কেলেঙ্কারি ফাঁস করার জন্য সরকারি মহলে পরিচিত। ওয়াকিবহাল মহলে প্রশ্ন, তবে কি গোড়াতেই নতুন উপরাষ্ট্রপতির কাছে প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়ে রাখলেন ঘনিষ্ঠকে? 
  • Link to this news (বর্তমান)