• ব্ল্যাকমেল ‘মাসিদের’, প্রসব করাতে ৫ হাজার টাকা দাবি! হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে শোরগোল
    বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: ব্ল্যাকমেলের নামান্তর! প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন মহিলা। তোলা হয়েছে টেবিলে। এমন সময় পাঁচ হাজার টাকা দাবি করলেন মাসিরা। না দিলে? প্রসব না করানো এবংচাঁচল বা মালদহে রেফার করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হল অন্তঃসত্ত্বা ও তাঁর পরিবারকে। এভাবেই রোজ মোটা টাকা আয় করছেন মাসিরা। 

    শুক্রবার একই ঘটনা ঘটলে চুপ করে অন্যায্য দাবি মেনে নেয়নি এক গর্ভবতীর পরিবার। কালবিলম্ব না করে মাসিদের অরাজকতা নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে। তারপরেই এদিন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দুই মাসিকে।

    হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ভিতরে লেখা রয়েছে-প্রসব পরিষেবার জন্য কাউকে টাকা দেবেন না। কিন্তু টাকা ছাড়া লেবার রুমে কোনও কাজ হয়না। মাসিরা অবশ্য চার থেকে পাঁচশো টাকা বকশিস নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। জোর করে টাকা নেওয়া হয় না বলে দাবি তাঁদের। তবে, গর্ভবতীরা সন্তানের ক্ষতির ভয়ে মাসিদের দাবি মতো টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। পুত্র সন্তান হলে মাসিদের দাবি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

    কিন্তু লেবার রুমের ঘটনা কী করে চিকিৎসকদের অজানা থাকছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে গর্ভবতীদের পরিবারের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, হয়তো মাসিদের আদায় করা ‘তোলা’র একাংশ যায় চিকিত্সক, নার্সদের কাছেও। 

    হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ ব্লকের ১৬ টি অঞ্চলের বহু মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন। অভিযোগকারী বাঘুয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন,গত শুক্রবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বোনকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। তাকে লেবার রুমে ঢুকিয়ে মাসিরা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। না দিলে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। ওই পরিস্থিতিতে দু’হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন মালেক। পরে আরও তিন হাজার টাকা দাবি করলে মাসিদের বিরুদ্ধে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ছোটন মণ্ডলের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। একই অভিযোগ দক্ষিণ মুকুন্দপুরের মাম্পি ভগতের। তাঁর কথায়, আমার স্বামীর কাছ থেকে দেড় হাজার টাকা নিয়েছেন মাসিরা। 

    ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিত্সক ছোটন মণ্ডল জানান, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়। লেবার রুমে তিনজন সরকারি নার্স ও ন’জন  মাসি রয়েছেন। মাসিরা কোনও টাকা পান না। অভিভাবকরা খুশি হয়ে যা দেন, সেটাই তাঁদের রোজগার। জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগ পেয়েছেন। তারপরেই দু’জন মাসিকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে যাতে এই ধরনের ঘটনানা ঘটে, অন্য মাসিদের সতর্ক করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)