অভাবী বিক্রি রুখতে কৃষকদের থেকেই সরাসরি আলু কিনবে কৃষি বিপণন দপ্তর
বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের পাশে দাঁড়াল বীরভূম জেলা কৃষি বিপণন দপ্তর। অভাবী বিক্রি রুখতে এবার সরাসরি হিমঘর থেকে ‘রেডি আলু’ কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে কৃষি বিপণন দপ্তরের তরফে জেলার নানা প্রান্তের চাষিদের থেকে আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে খবর, শুধুমাত্র প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র চাষিদের থেকেই রেডি আলু কেনা হবে। যাতে কোনওভাবেই তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে না পড়েন।
কৃষি বিপণন দপ্তরের জেলা আধিকারিক রাকেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা শুরু থেকেই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেইমতো হিমঘরে মজুত রেডি আলু সরাসরি চাষিদের থেকে ন্যায্য মূল্যে কিনে নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে সুফল বাংলার মাধ্যমে সেই আলু স্কুলের মিড-ডে মিলে পাঠানো হচ্ছে চাষিদের হাত ধরে। এছাড়াও শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ স্টলেও সেই আলু বিক্রি করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন চাষিরা উপকৃত হচ্ছেন, তেমনই সাধারণ মানুষও ন্যায্য দামে আলু পাবেন। প্রায়শই কৃষিকাজ শেষে আলুর সঠিক দর না পেয়ে চাষিদের একাংশের হতাশা দেখা যায়। বহু ক্ষেত্রে অভাবী বিক্রির মুখেও পড়তে হয়। সমস্যা সমাধানে এবছরই প্রথম জেলার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনা হয়েছিল। বোলপুর উত্তর অজয় কৃষক সমবায় হিমঘর ও নলহাটি সিএডিপি সমবায় হিমঘর চত্বরে সুফল বাংলার তরফে আলু কেনা হয়েছিল। সেইসঙ্গে চাষিদের দাবি মেনে জেলার নানা প্রান্তে অস্থায়ী শিবিরের মাধ্যমেও আলু কেনা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে প্রতি কেজি ১০টাকা করে মূল্য পেয়েছিলেন চাষিরা। এবার দ্বিতীয় ধাপে চাষিদের থেকে আলু কেনার প্রক্রিয়া শুরু হল। কৃষি বিপণন দপ্তরের নয়া এই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ১৫ জন প্রান্তিক চাষি উপকৃত হয়েছেন।
কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমঘরে মজুত আলুর বন্ড ছাড়াতে গিয়ে অনেক সময় চাষিদের বিপাকে পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে অনেক সময় তাঁদের ক্ষতির মুখেও পড়তে হয়। সেই ক্ষতি রুখতেই এবার হিমঘরে মজুত রেডি আলু কেনা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৯১০ কুইন্টাল আলু কেনা হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত এই পদ্ধতিতেই সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে আলু কেনার প্রক্রিয়া জারি থাকবে। ময়ূরেশ্বর-২ ব্লকের চাষি তাপস মণ্ডল বলেন, এবছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় কিছুটা ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। তবে সরকারিভাবে আলুর বন্ড কিনে নেওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি। এতে অনেকটাই সুবিধা হল।