শ্বশুরের সম্পত্তি হাতাতে চার দিনের মধ্যে প্রেম, বিয়ের ছক, গল্ফগ্রিনে বৃদ্ধ খুনে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি ধৃত জামাইয়ের
বর্তমান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাড়িতে মার্বেলের কাজ করতে গিয়ে আলাপ। দু’দিনের মাথায় প্রেমের প্রস্তাব। আলাপের চারদিনের মধ্যেই বিয়ের পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেছিল ব্যবসায়ী। নেপথ্যে ছিল শ্বশুরের কোটি টাকার সম্পত্তি হাতানোর ছক। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছে গল্ফগ্রিনে বৃদ্ধ খুনে ধৃত জামাই সঞ্জিত দাস ওরফে পুচকে (৩০)।
শনিবার সকালে গল্ফগ্রিন থানা এলাকার কলাবাগানে নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বৃদ্ধ শমীককিশোর গুপ্তের (৭৫) রক্তাক্ত দেহ। সিঁড়ির সামনে পড়ে থাকতে দেখা যায় সরকারি প্রতিষ্ঠান এ জি বেঙ্গলের অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মচারীকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় গল্ফগ্রিন থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর খুনের মামলা রুজু করেন তদন্তকারীরা। লালবাজার জানিয়েছে, বৃদ্ধের মাথায় ও শরীরে একাধিক জায়গায় ক্ষত রয়েছে। সেগুলি মারধরের জেরেই হয়েছে বলে ইঙ্গিত ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের। একইসঙ্গে তাঁকে সিঁড়ির উপর থেকে ধাক্কা দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ জেরার পর শনিবার শ্বশুরকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত জামাইকে।
সূত্রের খবর, সঞ্জিত পুলিশকে জানিয়েছে, সে স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় শমীকবাবুর সম্পত্তি সম্পর্কে তার আগে থেকেই ধারণা ছিল। আচমকা সেই সম্পত্তির মালিক হওয়ার সুযোগ চলে আসে যুবকের কাছে। দিন কুড়ি আগে ওই বাড়িতে মার্বেলের কাজের জন্য যায় সঞ্জিত। সেই সময় শমীকবাবুর মেয়ের সর্বাণী ওরফে সোমাশ্রীর সঙ্গে আলাপ হয় তার। কাজ চলাকালীন দু’দিনের মধ্যে যুবতীকে প্রেমের সম্পর্কে ফাঁসায় সঞ্জিত। সর্বাণী তাতে সম্মতি দিলে সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সে। প্ল্যান কাজ করে যাওয়ায় বিয়েতে আর দেরি করেনি যুবক। ১৫ দিন আগে রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে আইনত বিয়ে করে এই যুগল। সেই বিয়ে মেনে নেয়নি মেয়ের পরিবার। তার জেরে মেয়ে ও বাবার মধ্যে তীব্র বিবাদ হয়। সেই বিবাদ চলাকালীন শুক্রবার রাতে শমীকবাবুকে গল্ফগ্রিনের বাড়িটি সর্বাণীর নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেয় অভিযুক্ত। শ্বশুর তাতে সম্মতি না দেওয়ায় খুন করা হয় বলে দাবি তদন্তকারীদের। - ফাইল চিত্র