উত্তরপ্রদেশে শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। পুলিশ সূত্রের খবর, একজন মহিলা তাঁর প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে স্বামীকে খুন করেন। এর পরে স্বামীর দেহটি ২৫ কিলোমিটার দূরে রাস্তার পাশে ফেলে দেন, যাতে পুরোটা দুর্ঘটনা বলে মনে হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত মহিলা নেহা এবং তাঁর প্রেমিক জিতেন্দ্র দু’জনেই গোটা বিষয়টি স্বীকার করেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, নেহা তাঁর স্বামী নাগেশ্বর রাউনিয়ারকে প্রথমে একটি জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গিয়ে নাগেশ্বরকে অতিরিক্ত মদ্যপান করানো হয়। এর পরে নাগেশ্বর জ্ঞান হারালে নেহা তাঁর প্রেমিক জিতেন্দ্রর সাহায্যে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করেন। তার পরে তাঁরা বাইকে করে ২৫ কিলোমিটার দূরে নাগেশ্বরকে নিয়ে যান। জিতেন্দ্র বাইক চালাচ্ছিলেন। তাঁর সামনে নেহার সন্তান বসে ছিল। নেহা পিছনে স্বামীর নিথর দেহ ধরে বসে ছিলেন। এর পরে তাঁরা রাস্তার পাশে নাগেশ্বরকে ফেলে পালিয়ে যান।
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তরা মুম্বই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পারতাওয়াল এলাকার কাছে পুলিশ তাঁদের মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করে ধরে ফেলে। এই কাজে নাগেশ্বেরের বাবা পুলিশকে সাহায্য করেছিলেন। শনিবার সকালে নাগেশ্বরের দেহ উদ্ধারের পরে স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। নাগেশ্বরের বাবা কেশব রাজ পুলিশকে জানান, শুক্রবার বিকেলে তাঁর ছেলে বাইকে করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরে আর ফেরেননি। শনিবার সকালে তাঁরা ছেলের মৃত্যুর খবর পান। এর পরে কেশব নেহা এবং তাঁর প্রেমিক জিতেন্দ্রর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, মাদক সংক্রান্ত মামলায় এর আগে নাগেশ্বরের জেল হয়েছিল। সেই সময়ে নেহার সঙ্গে জিতেন্দ্রর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নাগেশ্বর জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাঁদের সম্পর্কের কথা জানতে পারেন। তিনি সেই সময়ে এই সম্পর্কের বিরোধিতা করেছিলেন। এ নিয়ে পরিবারে প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত। এর পরে নেহা স্বামীকে ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু নাগেশ্বর ডিভোর্স দিতে চাননি। তিনি নেহাকে বারবার ফোন করে বিরক্ত করতেন বলে অভিযোগ। এর পরেই তাঁরা নাগেশ্বরকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।
স্থানীয় থানার পুলিশ কর্তা অখিলেশ ভার্মা বলেন, ‘নাগেশ্বরের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা একটি মামলা দায়ের করে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করি। তারা দু’জনেই গোটা ঘটনাটা স্বীকার করেছে।’