"তালাক, তালাক, তালাক..." শুনেই স্বামীকে জুতো পেটা করলেন স্ত্রী! উত্তর প্রদেশের ভিডিও ভাইরাল...
আজকাল | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের রামপুরে আদালতের বাইরে স্বামীকে পা থেকে চটি বার করে বেদম মার এক মহিলার। ঘটনাটি রেকর্ড হয়ে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে ওই নারী জানান, বছরের পর বছর স্বামীর নির্যাতন, পণের দাবি, সন্তানদের ছিনিয়ে নেওয়া এবং আদালতের সামনে হঠাৎ তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ—সব কিছুরই প্রতিক্রিয়ায় তিনি আত্মরক্ষার্থে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন।
মহিলার অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর বিয়ে হয়েছিল ২০১৮ সালে। বিয়ের পরপরই স্বামী নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন শুরু করে এবং পণের দাবি তোলে। দুই কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে ভরণপোষণের মামলা দায়ের করলে স্বামী সন্তানদেরও কেড়ে নেয়। শুক্রবার সেই মামলার শুনানির জন্য তিনি মামা-ঘরের এক আত্মীয়ার সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, তাঁর স্বামী এসেছিল বাবাকে নিয়ে।
আদালত থেকে বের হওয়ার সময় স্বামী ও শ্বশুর তাঁকে ঘিরে ধরে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। অভিযোগ, শ্বশুরের প্ররোচনায় স্বামী আদালতের দরজার সামনেই তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ করে এবং তারপর তাঁকে মারধর শুরু করে। তখন আত্মরক্ষার্থে তিনি হঠাৎই নিজের চটি খুলে স্বামীকে ধরে বেদম প্রহার শুরু করেন। ভিড় জমে গেলে শ্বশুরকেও লক্ষ্য করে চটি চালান তিনি। এ সময় স্বামীর গায়ের জামা ছিঁড়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কেউ একজন পুরো দৃশ্য ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
ওই মহিলা, সাংবাদিকদের বলেন, “আমার বিয়ে ২০১৮ সালে। স্বামী আমাকে মারত, পণের জন্য নির্যাতন করত। দুই মেয়ের জন্মের পর বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি ভরণপোষণের মামলা করলে সন্তানদের কেড়ে নেয়। শুক্রবার শুনানির দিন আবার গালিগালাজ করে, মামলা তুলতে চাপ দেয়। হঠাৎই তালাক বলে তিনবার উচ্চারণ করে, তারপর আমাকে মারধর করে। আমি বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষার জন্য চটি হাতে তুলে নিই।’’
তিনি আরও বলেন, “আমার বড় মেয়ের বয়স ছয় বছর, ছোট মেয়ের মাত্র দু’বছর। আমি চাই ওদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ হোক। আমি ন্যায়বিচার চাই, সন্তানদের ফিরিয়ে নিতে চাই, তাদের ভরণপোষণ চাই এবং মেয়েদের নিয়ে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করতে চাই। সে জোর করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে, এখন আবার তালাক দিয়ে জীবন নষ্ট করেছে। কঠোরতম শাস্তি হোক ওর।” স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।