• মার্কিন শুল্ক-বাণে ধরাশায়ী অন্ধ্রের চিংড়ি রপ্তানি! প্রায় ২৫০০০ কোটি টাকার ক্ষতি, বাতিল ৫০ শতাংশ রপ্তানির বরাত
    আজকাল | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় পণ্যে আমদানি শুল্ক বাড়িয়েছে আমেরিকা। ফলে জোর ধাক্কা লেগেছে অন্ধ্রপ্রদেশের চিংড়ি রপ্তানিতে। অনুমান চিংড়ি রপ্তানিতে প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে। সরকারি আধিকারিকরা সোমবার জানিয়েছেন যে, প্রায় ২০০০ কন্টেইনার রপ্তানিতে ৬০০ কোটি টাকার কাছাকাছি শুল্কের বোঝা পড়েছে।

    অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু আবারও কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের চিংড়ি চাষিদের সহায়তা করার জন্য আবেদন করেছেন। এই মৎসজীবীরা মার্কিন আরোপিত শুল্কের কারণে তীব্র দুর্দশার সম্মুখীন।

    ভারতীয় পণ্যের আমদানিতে আমেরিয়া মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর উপরও রয়েছে ৫.৭৬ শতাংশ কাউন্টারভেলিং শুল্ক এবং ৩.৯৬ শতাংশ অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক। ফলে মোট মার্কিন শুল্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯.৭২ শতাংশে।

    মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু জিএসটি-তে ছাড় এবং রাজ্যের চিংড়ি চাষিদের আর্থিক প্যাকেজ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এইসব চাষিদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য জাতীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রী চিংড়ির অভ্যন্তরীণ ব্যবহার বৃদ্ধির জন্যও ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

    নাইডু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং মৎস্যমন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিংকে আলাদা আলাদা করে চিঠি লিখেছেন। তিনি অর্থমন্ত্রীকে জিএসটি এবং আর্থিক ত্রাণ, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রীকে চিংড়ি রপ্তানিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের এবং মৎস্যমন্ত্রীকে অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণের দিকে মনোনিবেশ করার মতো বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেছেন।

    মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, অন্ধ্রপ্রদেশের চিংড়ি চাষি এবং এই চাষের উপর নির্ভরশীল পরিবারগুলি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। রাজ্য সরকার বর্তমানে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তাও ব্যাখ্যা করেছে মুখ্যমন্ত্রী। দেশের চিংড়ি রপ্তানির ৮০ শতাংশ এবং সামুদ্রিক রপ্তানির ৩৪ শতাংশ হয় অন্ধ্র থেকে। এই রপ্তানির বার্ষিক লেনদেন প্রায় ২১,২৪৬ কোটি টাকা। প্রায় আড়াই লক্ষ মৎসজীবী পরিবার এবং সংশ্লিষ্ট শিল্পের উপর নির্ভরশীল ৩০ লক্ষ মানুষ সমস্যায় পড়েছেন।

    চন্দ্রবাবু বলেছেন যে মার্কিন শুল্ক চিংড়ি রপ্তানির উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ত্রাণ ব্যবস্থা করেছে - উদাহরণস্বরূপ, খাদ্য উৎপাদনকারীদের সঙ্গে আলোচনার পর, অ্যাকোয়া ফিডের দাম প্রতি কেজি নয় টাকা কমানো হয়েছে। ট্রান্সফরমারের ভর্তুকিযুক্ত সরবরাহের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি রপ্তানিকারক এবং অ্যাকোয়া কোম্পানিগুলির জন্য ব্যাঙ্ক সহায়তার অনুরোধ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ঋণ এবং সুদ পরিশোধের উপর ২৪০ দিনের স্থগিতাদেশ, সুদের ভর্তুকি এবং ফ্রোজেন চিংড়ির উপর পাঁচ শতাংশ জিএসটি সাময়িকভাবে মুকুব।

    এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু, কেন্দ্রকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্যকরণের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব এবং রাশিয়ার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার পরামর্শ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী রপ্তানিকারকদের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন আর্থিক সহায়তা, শুল্ক/কর ত্রাণ প্রকল্পের নিশ্চয়তা চেয়েছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে, রপ্তানিকারকরা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে সামুদ্রিক খাবার সরবরাহ করতে প্রস্তুত।
  • Link to this news (আজকাল)