নির্বিঘ্নে সম্পন্ন এসএসসি পরীক্ষা, পুজোর পর ফলপ্রকাশ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
একরাশ আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হল এসএসসি-র দুই দফা পরীক্ষা। তবে ফলপ্রকাশ কবে? ইন্টারভিউ কবে? এমন অসংখ্য প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষক মহলে। পরীক্ষা শেষ হতেই বিকাশ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সেসব প্রশ্নের উত্তর দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এসএসসি-র চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বিনোদ কুমার। শুরুতেই মন্ত্রী জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রীর অভিভাবকত্বে দুই ধাপের পরীক্ষাই সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার নবম-দশমের এবং ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে একাদশ-দ্বাদশের মডেল উত্তরপত্র এসএসসি-র ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। উত্তর সংক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের যাবতীয় সমস্যার সমাধানের জন্য বরাদ্দ হবে পাঁচ দিন। পুজোর পর প্রকাশিত হবে ফলাফল। এরপর নম্বর-সহ প্রকাশ পাবে ইন্টারভিউ তালিকা। নভেম্বর মাস থেকে শুরু হবে ইন্টারভিউ পর্ব। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ২০১৬-র চাকরিহারা শিক্ষকরা অভিজ্ঞতার জন্য অতিরিক্ত দশ নম্বর পাবেন। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এসএসসি। ১ জনুয়ারি থেকে শুরু হবে নতুন শিক্ষাবর্ষ, সেই নতুন পর্বে যোগ্য শিক্ষকরা ফিরবেন স্কুলে।
স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এই প্রথম এসএসসি ওএমআর-র প্রতিলিপি পরীক্ষার্থীদের কাছে দিয়েছে। সেই সঙ্গে প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার দু’বছর পর্যন্ত ওএমআর সংরক্ষিত রাখবে কমিশন এবং প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর আগামী দশ বছর ওএমআর-র স্ক্যান কপি সংরক্ষণ করবে কমিশন। ৭ সেপ্টেম্বরের নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ৩ লক্ষ ১৯ হাজার ৯৬১জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৫২ জন অর্থাৎ ৯১.৬২ শতাংশ। পাশাপাশি ১৪ সেপ্টেম্বরের একাদশ-দ্বাদশে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৫৪৩ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৪৯৭ জন অর্থাৎ ৯৩ শতাংশ। উল্লেখ্য, এর মধ্যে প্রায় ৪৫ হাজার পরীক্ষার্থী ছিলেন ভিনরাজ্যের (বিশেষত উত্তরপ্রদেশ, বিহার)। ৭ সেপ্টেম্বরের পরীক্ষায় ৩১,৩৬২ জন এবং ১৪ সেপ্টেম্বরের পরীক্ষায় ১৩,৫১৭ জন ছিলেন ভিনরাজ্যের পরীক্ষার্থী।
এই তথ্য প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘ডবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতার হিসেব এই পরিসংখ্যান থেকেই পাওয়া যাচ্ছে! বাঙালি বিজেপি-রাজ্যে অত্যাচারিত হলেও, ওই রাজ্যের শিক্ষিত বেকারদের আমরা অপমান করব কেন?’ শিক্ষামন্ত্রী বারংবার জানিয়েছেন, ‘এই ত্রুটিমুক্ত পরীক্ষার নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা যুব সমাজের বিশ্বাস অর্জন করেছে।’ এমতবস্থায় বিরোধীদের আক্রমণ, আবারও প্যানেল বাতিল হবে! পাল্টা ব্রাত্য বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের মামলা করার অধিকার রয়েছে। মামলা করুন। কিন্তু মনে রাখবেন, যাঁদের জন্য মামলা করছেন তাঁরা আমার-আপনার রাজ্যের বাসিন্দা। ত্রুটিমুক্ত পরীক্ষার পরেও মামলা হলে স্বাগত জানাব। যোগ্য আন্দোলনকারীরা যেন চাকরি পান, শুভকামনা রইল।’