দক্ষিণ দিনাজপুরে বেটিং চক্রের রমরমা! তদন্তে উদ্ধার ১ কোটিরও বেশি নগদ, কীভাবে চলত এই চক্র?
প্রতিদিন | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রাজা দাস, বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুরে বেটিং চক্রের রমরমা! বিভিন্ন অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটকে ব্যবহার করে চলছে বেআইনি এই কারবার। বেআইনি এই চক্রের পাল্লায় পড়ে ইতিমধ্যে বহু পরিবার সর্বস্বান্ত হয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। যদিও বেটিং চক্রের কেলেঙ্কারি রুখতে একেবারে কোমর বেঁধে নেমেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পুলিশ প্রশাসন। অভিযান চালিয়ে গত কয়েকদিনে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, রবিবার রাতভর তল্লাশিতে জেলাজুড়ে এক কোটি টাকারও বেশি নগদ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর।
আজ সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ”বেআইনি বেটিং চক্রের মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।” তবে এই চক্রের পিছনে আরও মাথা থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের। তাঁদের খোঁজেই বিভিন্ন জায়গায় তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিভিন্ন অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেটিং চক্রের রমরমা বাড়ছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। এমন খবর আসে জেলা পুলিশ প্রশাসনের কাছে। এরপরেই জেলাজুড়ে অভিযানে নামেন পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা। কয়েকদিন আগেই বেটিং চক্রের সঙ্গে যুক্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। শুধু তাই নয়, তদন্তে নেমে পুলিশ আধিকারিকরা এই চক্রের ৩ জন মাথার হদিশ পান। তাঁদের মধ্যে পিন্টু ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত পিন্টু স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী। এই ব্যবসার আড়ালেই বেটিং চক্র চলত বলে অভিযোগ।
শুধু তাই নয়, ধৃত পিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অপূর্ব সরকার ও কুণাল দাস নামে বাকি দুই জনের জানা যায়। এর পরেই পুলিশ সিকিমের গ্যাংটক থেকে অপূর্ব সরকার ও কুণাল দাসকে গ্রেফতার করে আনে।
জানা যায়, ধৃত অপূর্ব গঙ্গারামপুরের নয়াবাজার হাই স্কুলের শিক্ষক। তাঁর কীর্তিতে অবাক জেলার মানুষ। এখানেই শেষ নয়! অপূর্বকে জেরা করে রবিবার রাতেই বালুরঘাটে রঘুনাথপুর এলাকায় অবস্থিত তাঁর শ্বশুর বাড়িত হানা দেন তদন্তকারীরা। বেটিং-এর বিপুল অর্থ সেখানেই লুকিয়ে রাখার কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা।
এরপরেই রবিবার সন্ধ্যায় বালুরঘাটের রঘুনাথপুর এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে হানা দিয়ে শোওয়ার ঘর ও ঠাকুর ঘরে লুকিয়ে রাখা ১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা উদ্ধার করে। শুধু রঘুনাথপুর এলাকাতেই নয়, গভীর রাতে গঙ্গারামপুর শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় চলে পুলিশের বিশেষ অভিযান। চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, আরও কয়েক লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।