• নিয়োগ দুর্নীতিতে আদালতে হাজিরা পার্থর, নিজেকে নির্দোষ দাবি, থামালেন বিচারক
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজিরা দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সোমবার আলিপুরের সিবিআই বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজিরা দেন তিনি। হাসপাতালের বেডে শুয়ে, চোখে কালো চশমা পরে হাজির হওয়া পার্থ এদিনও দাবি করলেন, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আরও কিছু বলতে চাইলে বিচারক তাঁকে থামিয়ে দেন।


    নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের মামলায় এদিন চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া চলাকালীন বিচারক স্পষ্ট মন্তব্য করেন, অভিযুক্তরা একযোগে ষড়যন্ত্র করে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এমনকি পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর বিকৃত করা হয়েছে। জীবনকৃষ্ণ সাহা, প্রসন্ন রায়-সহ একাধিক অভিযুক্তকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘‘আপনারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন, চাকরিপ্রার্থীদের প্রভাবিত করে ঘুষ নিতে বাধ্য করেছেন।’ অভিযোগ ওঠে, কখনও ভুয়ো নিয়োগপত্র, কখনও আবার বৈদ্যুতিন নথি জাল করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে। পার্থকে উদ্দেশ করে বিচারক আরও জানান, তিনি অশোক সাহা, শান্তিপ্রসাদ সিংহ ও কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে বসিয়ে বেআইনি কাজ করিয়েছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করা যাবে না।

    পার্থর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী। তাঁর দাবি, এই মামলায় ইতিমধ্যেই চারটি চার্জশিট দাখিল হয়েছে। কিন্তু প্রথম কয়েকটি চার্জশিটে পার্থর নাম ছিল না। পরে রাজনৈতিক চাপে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আইনজীবীর বক্তব্য, কোনও নিরপেক্ষ সাক্ষীর বয়ানে পার্থকে সরাসরি জড়িত বলা হয়নি। কেবলমাত্র একজনের সাক্ষ্যকে ভিত্তি করে তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। ফলে তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত। শুনানির সময় প্রায় পুরোটা সময় হাসপাতালের নথি হাতে নিয়ে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মাঝে মধ্যে সরাসরি বক্তব্য রাখতে চাইলে বিচারক তাঁকে থামিয়ে দেন। তবু তিনি ফের বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমি আপনার উপর আস্থা রাখছি। প্রতিদিন একই কথা বলব।’ বিচারক স্পষ্ট করেন, আইনজীবী মারফত তাঁকে বক্তব্য জানাতে হবে।

    উল্লেখ্য, ২০২২ সালে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রথমে ইডি, পরে সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ধীরে ধীরে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ মামলাতেও তাঁর নাম জড়িয়ে যায়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে এসএসসি সংক্রান্ত আরেক মামলায় ফের গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে গ্রুপ সি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই যে প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছিল, তাতে নাম ছিল সমরজিৎ আচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিংহ, সৌমিত্র সরকার, অশোক সাহা, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, দীপঙ্কর ঘোষ, সুব্রত খাঁ, অক্ষয় মণি ও ইদ্রিস আলি মোল্লার। পরবর্তী চার্জশিটে পার্থকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়। তবে সাম্প্রতিক চূড়ান্ত চার্জশিটে নতুন কোনও অভিযুক্তের নাম না থাকলেও, নতুন তথ্যপ্রমাণ যুক্ত করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)