মাওবাদী বিরোধী অভিয়ানে যৌথবাহিনীর বড় সাফল্য, চলতি বছর এখন পর্যন্ত নিহত কতজন?
আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাওবাদী অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেল যৌথবাহিনী। সোমবার সকালে ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন একজন শীর্ষ মাওবাদী নেতা এবং আরও দুই সাগরেদ। নিহত মাওবাদী কমান্ডারের নাম সহদেও সোরেন। সহদেও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সহদেও-কে ধরতে প্রশানের তরফে এক কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। সহদেও সোরেন ছিলেন পূর্ব ভারতের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড মাওবাদী নেতা।
ঝাড়খণ্ড পুলিশের মতে, নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কোবরা ব্যাটালিয়ন, গিরিডি পুলিশ এবং হাজারিবাগ পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। যৌথবাহিনীর অভিযানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালায় মাওবাদীরাও। গিরিডি-বোকারো সীমান্তের কাছে তাতিঝারিয়া থানার সীমানার কারান্দি গ্রামে যৌথবাহিনী-মাওবাদী সংঘর্ষে সকাল ৬টা নাগাদ গুলির লড়াইয়ে প্রাণ যায় সহদেও সোরেনের।
সংঘর্ষে নিহত হয়েছে আরও দুই মাওবাদী নেতা রঘুনাথ হেমব্রম ওরফে চঞ্চল এবং জোনাল কমিটির সদস্য বীরসেন গাঞ্জু ওরফে রামখেলাওয়ান। রঘুনাথ হেমব্রম ছিলেন বিহার-ঝাড়খণ্ড স্পেশাল এরিয়া কমিটির সদস্য। তাঁকে ধরতে ২৫ লক্ষ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছিল। পাশাপাশি বীরসেন ছিলেন জোনাল কমিটির সদস্য, তাঁকে ধরতে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা ছিল।
নিরাপত্তা বাহিনী সংঘর্ষের পর এই তিন মাওবাদীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বনাঞ্চলে এখনও তল্লাশি অভিযান জারি আছে।
জোরদার মাওবাদী অভিযান চলছে দেশজুড়ে। ২০২৬ সালের মধ্যে মাওবাদীমুক্ত ভারত গড়ার সংকল্প নিয়েছে কেন্দ্র। সেই অভিযানে সোমবার ভোরে এল বড় সাফল্য। এ বছর এখনও পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২৪৫ জন মাওবাদীর মৃত্যু হয়েছে। ছত্তিশগড়ের বস্তার ডিভিশনেই নিহত ২১২ জন মাওবাদী।
উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শেষমেষ আত্মসমর্পণ করেন নিহত মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেণজির স্ত্রী পোথুলা পদ্মাবতী। সংগঠনে তিনি কল্পনা ও সুজাতা নামেও পরিচিত ছিলেন। পদ্মাবতী শনিবার হায়দ্রাবাদে তেলেঙ্গানা পুলিশের ডিজি জিতেন্দ্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
১৯৮২ সাল থেকে আত্মগোপন করেছিলেন মাওবাদী নেত্রী ৬২ বছর বয়সী পোথুলা পদ্মাবতী। তাঁর মাথার দাম ছিল এক কোটি টাকা। সেই দোর্দদণ্ডপ্রতাপ মাও নেত্রীই আত্মসমর্পণ করেন।
আত্মসমর্পণকারী পদ্মাবতী মাওবাদীদের দক্ষিণ উপ-জোনাল ব্যুরো সচিব এবং দণ্ডকারণ্য বিশেষ জোনাল কমিটির 'জনগণের সরকার'-এর দায়িত্বে থাকা-হ গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিলেন।
তেলেঙ্গানা পুলিশ পদ্মাবতীর আত্মসমর্পণকে "নৈতিক জয়" বলে অভিহিত করেছে। উল্লেখ করেছে যে, শুধুমাত্র ২০২৫ সালে ৪০৪ জন মাওবাদী ক্যাডার আত্মসমর্পণ করেছে।