স্ত্রীর এআই করা নগ্ন ছবি ফাঁস, গাড়িতে পিষে মারতেও চেয়েছিল! শেষমেশ প্রকাশ্যে পরপর গুলি চালাল স্বামী, কারণ কী জানেন?
আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড। প্রতারণার অভিযোগে ও প্রতিশোধস্পৃহায় স্ত্রীকে বারবার হেনস্থা করেছিলেন। এমনকী খুনের চেষ্টাও করেন একাধিকবার। অবশেষে ভরা রাস্তায় প্রকাশ্যে স্ত্রীকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালাল স্বামী। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়তেই মর্মান্তিক পরিণতি তরুণীর।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চারদিন আগেই নন্দিনী নামের এক তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ায় জন্মদিনের একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। আসলে জন্মদিনটি ছিল ওই তরুণীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর। ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের উদযাপনে মেতে উঠতে দেখেই রাগে ফুঁসতে থাকে তরুণীর স্বামী।
এই ঘটনার ঠিক চার দিন পরেই ভরা রাস্তায় তরুণীকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালিয়ে খুন করে অরবিন্দ নামের অভিযুক্ত যুবক। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০২৩ সালে অরবিন্দ ও নন্দিনী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের কয়েক মাস পরেই নন্দিনী জানতে পারেন, অরবিন্দ এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। সেই মহিলার আবার এক সন্তান রয়েছে।
অরবিন্দের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরেই অশান্তি শুরু হয়। তখন থেকেই হেনস্থা করত নন্দিনীকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নন্দিনীর এআই করা নগ্ন ছবি, ভিডিও ফাঁস করেছিল অরবিন্দ। এরপর থানায় অরবিন্দের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন নন্দিনী। সেই সময় কয়েক সপ্তাহের জন্য জেলবন্দি ছিল অরবিন্দ। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আবারও নন্দিনীকে নির্যাতন শুরু করে। সেই সময় অরবিন্দ ও তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারাও নির্তযাতনের শিকার হন তরুণী।
বিষয়টি এখানেই থেমে থাকেনি। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই তরুণীকে গাড়িতে পিষে মারতেও চেয়েছিল অরবিন্দ। গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপর আর শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যাননি। দিল্লিতে একাই থাকতেন শুরু করেন। অন্যদিকে অরবিন্দের সন্দেহ হয়, নন্দিনী তাঁর সহকর্মী অঙ্কুশ পাঠকের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
দিন কয়েক আগেই দিল্লি থেকে গোয়ালিয়রে অঙ্কুশের জন্মদিন উদযাপন করতেই এসেছিলেন নন্দিনী। চার দিন আগে সেই জন্মদিনের পার্টির একগুচ্ছ ছবি, ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। সেই ভিডিও চোখে পড়ে অরবিন্দের। এরপরই রাগের মাথায় নন্দিনীকে খুনের পরিকল্পনা করে। বিষয়টি নিয়ে অঙ্কুশ ও নন্দিনীর সঙ্গে ঝামেলাও করে অরবিন্দ।
মৃত তরুণীর বন্ধুরা জানিয়েছেন, অরবিন্দের এই আচরণের পর থানায় অভিযোগ জানাতে যাচ্ছিলেন নন্দিনী। সঙ্গে ছিলেন অঙ্কুশ ও আরও একজন বন্ধু। সকলে মিলে রিক্সায় চেপে যাচ্ছিলেন। সেই রিক্সা অনুসরণ করে অরবিন্দও যাচ্ছিল পিছু পিছু। পুলিশ আধিকারিকের অফিসে পৌঁছনোর আগেই ভরা রাস্তায় নন্দিনীর রিক্সা থামায় অরবিন্দ।
ব্যস্ত রাস্তায়, পুলিশ আধিকারিকের অফিসের অদূরেই নন্দিনীকে লক্ষ্য করে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় অরবিন্দ। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি লুটিয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দুই ঘণ্টা পরেই তরুণীর মৃত্যু হয়। নন্দিনীকে গুলি করার পরে, পুলিশের উপরেও হামলা করার চেষ্টা করেছিল অরবিন্দ। অবশেষে সেই রাস্তা থেকেই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।