• চন্দননগরে শোভাযাত্রা রুটে উচ্ছেদ অভিযান, জেসিবি মেশিন দিয়ে ভেঙে দেওয়া হল একের পর এক বেআইনি নির্মাণ...
    আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত বছর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্য জুড়ে সরকারি জায়গা এবং ফুটপাত যারা দখল করে রেখেছে তাদের উচ্ছেদ করতে। সেই নির্দেশ মতো বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছিল উচ্ছেদ অভিযান। চন্দননগরেও উর্দি বাজার এলাকায় রাস্তার দু’ধারের বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করতে নোটিশ জারি করে কর্পোরেশন। তৃণমূল কংগ্রেসের একটি দলীয় কার্যালয় ছিল সেখানে। সেই কার্যালয় সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু দোকানদার যাঁরা রাস্তার জায়গা দখল করেছিল তারাও পিছিয়ে যান। তবে সম্পূর্ণ দখলদার মুক্ত করা সম্ভব হয়নি।

    নোটিশ পাওয়ার পরেই যারা জবরদখল মুক্ত করেননি, তাদের সরিয়ে দিতে পদক্ষেপ চন্দননগর পুরসভার। সোমবার চলে সেই উচ্ছেদ অভিযান। চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী জানান, সোমবার উচ্ছেদ অভিযান চলছে। কোনও বাঁধার সম্মুখীন না হয়েই। এর আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একাধিকবার মিটিং করা হয়েছে এই বিষয়ে। মূলত, চন্দননগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রার রুটে পরে এই উর্দি বাজার। সেই রাস্তার দু’দিকে দখল করে রাখায় শোভাযাত্রার ক্ষেত্রেও যেমন সমস্যা হত সাধারণ পথচলতি মানুষেরও সমস্যা হত। তাই চন্দননগর কর্পোরেশন ঠিক করে বেআইনি দখল উচ্ছেদ করে সেখানে ফুটপাত তৈরি করে দেওয়া হবে এবং রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়া হবে। চন্দননগরের অন্যান্য রাস্তাতেও একইভাবে ফুটপাত এবং রেলিং দেওয়া হয়েছে।

    মেয়র বলেন, “চন্দনগর উর্দি বাজার এবং মহকুমাশাসকের দপ্তরের সামনে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে, এই অভিযানে কোনও বাধা আসেনি।”

    চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জন মানেই বিখ্যাত শোভাযাত্রা। আলোর শোভাযাত্রা। বড় লরিতে সুউচ্চ জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। সঙ্গে থাকে আরও একাধিক লরি। সেগুলিতে থাকে আলোর নানা কারসাজি। চন্দননগরে কেন্দ্রীয় পুজো কমিটির অন্তর্ভুক্ত মোট বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা ১৭৭টি। যদিও সব পুজো কমিটি শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করে না। গত বছর শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করছিল ৬৯টি বারোয়ারি। বাকি ১০৮টি বারোয়ারি আলাদা করে প্রতিমা নিরঞ্জন করেছিল।

    অন্যদিকে, দুর্গাপুজোয় বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে চলেছে চন্দননগর পুলিশ। উইনার টিম, মহিলা পুলিশের টিম, সিসি ক্যামেরায় চলবে নজরদারি। সোমবার চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে পুজো কমিটিগুলোকে নিয়ে এক সমন্বয় বৈঠক হয়। মঞ্চ থেকে রাজ্য সরকারের দেওয়া এক লক্ষ দশ হাজার টাকা অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয় পুজো কমিটিগুলোকে।  চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত ১৭০০-এর বেশি দুর্গা পুজো কমিটি এবার সরকারি অনুদানের চেক পাবে। 

    পুজোর সময় ভিড় সামলাতে পুলিশের পাশাপাশি পুজো কমিটির স্বেচ্ছাসেবকদেরও প্রয়োজন হবে। পুজোর প্যান্ডেলে প্রবেশ ও বেরোনোর রাস্তা ঠিকমতো আছে কি না, সব নিয়ম মেনে পুজো হচ্ছে কি না, তা সরেজমিনে দেখছেন পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি। কমিশনার জানান, প্রতি বছরই হুগলিতে দুর্গাপুজোয় দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। সেই কথা মাথায় রেখেই একগুচ্ছ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে পুজো কমিটিগুলোকে। পাশাপাশি পুলিশও সতর্ক থাকবে। মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। উইনারস টিম যেমন থাকবে, পাশাপাশি সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশকর্মীরাও বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালাবেন। 

    প্রশাসন, পুরসভার পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। রেল স্টেশনগুলিতো বাড়তি নজরদারি থাকবে। পুজোর দিনগুলিতে যাতে মানুষের কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকেও নজর রাখা হবে। যেসব জায়গায় খুব ভিড় হয়, সেখানে অটো এবং টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কিছু জায়গায় নো-এন্টি থাকবে। দুর্গাপুজো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ ও প্রশাসন সব রকম ভাবে প্রস্তুত। 
  • Link to this news (আজকাল)