• বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, গ্রেপ্তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী-সহ ৩ জন...
    আজকাল | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: এলাকায় অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে বোমা তৈরি করতে গিয়ে সেই বোমা ফেটে জখম সদ্য কৈশোর পার হওয়া এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার  রাতে মুর্শিদাবাদের রাণীনগর থানার অন্তর্গত নজরানা গ্রামে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত ওই কিশোরের নাম রিয়ান মন্ডল (১৮)। ওই যুবকের পায়ে বোমার স্প্রিন্টারের আঘাত থাকায় তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় রিয়ানকে বোমা তৈরি করতে সাহায্য করার অভিযোগে রানীনগর থানার পুলিশ আরও তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে একজন রানীনগরের একটি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। 

    মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং বলেন,' রবিবার রাত ন'টা নাগাদ রানীনগর থানার পুলিশ খবর পায় নজরানা গ্রামে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় পৌঁছে এক ব্যক্তিকে আহত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে। তার পায়ে আঘাত ছিল। বর্তমানে ওই ব্যক্তি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।' তিনি আরও বলেন,' ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে ওই তিন ব্যক্তিও বোমা তৈরির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল।  তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলার রুজু করে সাত দিনের পুলিশে হেফাজতের আবেদন জানিয়ে সোমবার লালবাগ আদালতে পেশ করা হচ্ছে।'

    রানীনগর থানার ওই আধিকারিক জানান,  আহত এবং ধৃত তিন যুবক সম্প্রতি এলাকায় ছোটখাটো অপরাধের ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল। পুলিশের অনুমান এলাকায় নিজেদের আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য গোপনে তারা  বোমা তৈরির কাজে হাত পাকাচ্ছিল। রবিবার রাতে বোমা তৈরি করার সময়  হঠাৎ করেই সেই বোমা ফেটে যায়। তবে উচ্চ মাধ্যমিক এক পরীক্ষার্থী বোমা তৈরির কাজে যুক্ত হয়ে পড়ায়  গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও ধৃত বাশিরুল এবং রাশিদুলের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, তাদের ছেলেরা বোমা তৈরীর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং বিস্ফোরণের ঘটনার সময় তারা এলাকাতেই ছিল না। রাশিদুল শেখের মা মরিয়াম বিবি বলেন, 'আমার ছেলে বোমা তৈরি করা জানেও না এবং সে ঘটনাস্থলে ছিল না। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগেও  সে মাঠে ঘাস কাটছিল। তারপর সে মোবাইল ফোন দেখছিল। বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটার পর আহত যুবকের পরিবারের লোকেরা তাকে উদ্ধার করার জন্য আমার ছেলের সাহায্য চেয়েছিল। আমার ছেলে যখন  সাহায্য করতে যায় সেই সময় পুলিশ তাকে ধরেছে।' প্রায় একই রকম বক্তব্য রেখেছেন  পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া বাশিরুল মণ্ডলের বাবা দুলাল মন্ডল। তিনি বলেন, 'গোধনপাড়া এলাকায় আমার ছেলের একটি  পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। আমার ছেলে বোমা তৈরির কিছুই জানে না। এলাকায় একটি  দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং আহতকে সাহায্য করার জন্য রিয়ান মন্ডলের বাড়ির লোকেরা আমার ছেলের সাহায্য চেয়েছিল। আমার ছেলে যখন আহত ওই যুবককে উদ্ধার করতে চায় সেই সময় এলাকায় পুলিশ পৌঁছে যায় এবং আমার ছেলেকে গ্রেপ্তার করে।'

    যদিও রানীনগর থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ধৃত যুবকদের বিরুদ্ধে বোমা তৈরি করার যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। পুলিশ এলাকা থেকে ফেটে যাওয়া বোমার বেশ কিছু অংশ উদ্ধার করেছে। বোমা তৈরির এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ  যুক্ত রয়েছে কিনা পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
  • Link to this news (আজকাল)