• ১৮টি ব্লকে আধিকারিক মাত্র ছ’জন
    আনন্দবাজার | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • গ্রামে শিল্প ও শিল্পোদ্যোগী তৈরি করার লক্ষ্যে সরকারি প্রচার বা কর্মসূচি কম হয় না। কাজগুলির রূপায়ণে প্রতি ব্লকে ক্ষুদ্র শিল্প দফতরও আছে। কিন্তু হুগলি জেলার ১৮টি ব্লকে সংশ্লিষ্ট দফতরে আধিকারিক আছেন মাত্র ছ’জন। ফলে, একজনকে একাধিক ব্লকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর জেরে পরিষেবা প্রায় স্তব্ধ বলে অভিযোগ জেলার একাধিক শিল্পোদ্যোগী ও শিল্পের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের।

    আরামবাগ মহকুমার ছ’টি ব্লকের মধ্যে খালি খানাকুল ১ ব্লকে শিল্প আধিকারিক আছেন। চুঁচুড়া-মগরা, পোলবা-দাদপুর, পান্ডুয়া, সিঙ্গুর ও শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকেও আধিকারিক আছেন। এই পরিস্থিতিতে দফতরের ন্যূনতম পরিষেবা পেতেও বহু মানুষকে যেতে হচ্ছে চুঁচুড়ায় জেলার ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প উদ্যোগ দফতরে।

    ওই দফতর সূত্রের খবর, তাদের পরিষেবাগুলির মধ্যে অন্যতম গ্রামবাসীদের শিল্পোদ্যোগে আগ্রহী করে শিল্প স্থাপনে সাহায্য করা। এ ছাড়া, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্র-সহ সরকারি নথি সংগ্রহে সহযোগিতা, শিল্প স্থাপনে উৎসাহ-ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ, হস্তশিল্পীদের পরিচয়পত্র, পেনশন, ঋণ, এবং তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির সুযোগের জন্য সুপারিশ করা, শিল্পভিত্তিক সঙ্ঘ বা সমবায় সমিতি গঠনে উৎসাহিত করা ইত্যাদি।

    ব্লকগুলিতে আধিকারিকের ঘাটতি প্রসঙ্গে জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার সুমনলাল গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। তবে, জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনের নজরে আছে। পদ ফাঁকা থাকলেও কাজ থেমে নেই।’’

    গ্রামে ছোটখাটো শিল্পের সঙ্গে জড়িতেরা কিন্তু সে কথা মানছেন না। কাঁসা-ঘড়া শিল্পের সঙ্গে যুক্ত গোঘাট ১ ব্লকের বালিদেওয়ানগঞ্জের বাসিন্দা কৌশিক দাসের অভিযোগ, “ব্লকে আধিকারিকের অভাবে হস্তশিল্প সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কোনও পরামর্শই পাচ্ছি না। প্রায় ৯০ কিমি দূরে চুঁচুড়া জেলা কার্যালয়ে যেতে হচ্ছে। নতুন প্রকল্পগুলিরও ঠিক সময়ে খবর মিলছে না।”

    বেকার যুবকদের মধ্যে আরামবাগের হরিণখোলার শেখ মুরসেদের অভিযোগ, “২০১৪ সালে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সরকার প্রচার করেছিল, গ্রামে উদ্যোগপতি খুঁজে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া-সহ যাবতীয় সহায়তা করা হবে। ব্যাঙ্ক ঋণেরও ব্যবস্থা হবে। কিন্তু গত দশ বছরেও কিছু হয়নি।” তাঁর ক্ষোভ, আধিকারিকেরা গ্রামে আসা তো দূর, কোন ব্লকে কবে আসবেন, সেই সন্ধান পেতেই চটি ক্ষয়ে যাচ্ছে। একই রকম অভিযোগ তুলছেন আরও অনেকে।

    ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের সমস্যা হচ্ছে বলে মানছেন সংশ্লিষ্ট বিডিওরা। তাঁরা জানান, বিষয়টি জেলা প্রশাসনে জানানো হয়েছে। জেলায় টিকে থাকা ব্লক শিল্প উন্নয়ন আধিকারিকেরা জানান, নিজেদের ব্লকের পঞ্চায়েতগুলিতে বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচি(পাড়ায় সমাধান, দুয়ারে সরকার ইত্যাদি) ছাড়াও দফতরের যে সব কাজ আছে, তা সামলে একার পক্ষে একাধিক ব্লকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া সম্ভব
    হচ্ছে না।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)