আজও ভক্তি, উৎসাহের কমতি নেই আসানসোলের বার্নপুর শিল্পশহরে শতাব্দী প্রাচীন নেপালি দুর্গাপুজোয়। ইস্কো কারখানার জন্য পরিচিত এই শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। বহু বছর আগে নেপাল থেকে বেশ কিছু পরিবার জীবিকার সন্ধানে এখানে এসেছিলেন। তাঁরাই শুরু করেছিলেন নেপালি রীতিতে পুজো। নেপালি মন্ত্র উচ্চারণ ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুর্গার আরাধনা করা হয়।
কালের বিবর্তনে অনেক নেপালি পরিবার অবসরের পরে অন্যত্র চলে গেলেও এই পুজোর ঐতিহ্য অটুট রয়েছে। বর্তমানে শুধু নেপাল থেকে আসা বাসিন্দারা নয়, বিভিন্ন জাতি ও ভাষাভাষী মানুষ এই পুজোয় যোগ দেন। ভক্তি ভরে পুজো দেন এবং আনন্দে মেতে ওঠেন। অনেক নেপালি পরিবার, যাঁরা বাইরে চলে গিয়েছেন, তাঁরাও দুর্গাপুজার সময় বার্নপুরে ফিরে আসেন উৎসবের টানে।
এই মন্দিরের পুরোহিত এখনও নেপালি সম্প্রদায়ের। পুজো কমিটিতেও বেশ কিছু নেপালি পরিবারের সদস্য রয়েছেন। তবে তাঁদের দাবি, নেপালি দুর্গা মন্দির নাম হলেও এটি এখন সব জাতি-বর্ণের মানুষের কাছে সর্বজনীন দুর্গা মন্দির হয়ে উঠেছে। এই পুজো শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং সাংস্কৃতিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে। পুরোহিত গোপাল পণ্ডিত জানান, নেপালি ভাষায় পুজো হয়। শতাধিক বছরের পুরনো এই মন্দির। নেপালিরা মন্দির তৈরি করায় এমন নাম। কিন্তু, সকলেই মন্দিরে এসে পুজো করতে পারেন। পুজোয় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। আয়োজন করা হয় ভোগ প্রসাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামসুন্দর সাঁই বলেন, ‘‘আমি ছোট থেকে এখানে থাকি। ছেলেবেলা থেকে দেখে আসছি নেপালি দুর্গাপুজো। আমাদের রীতিনীতি মেনে পুজো পাঠ করা হয়। পুজোর ক’টা দিন খুব আনন্দে কাটে।’’