তিস্তার জল বইছে বিপদসীমা ছুঁয়ে। জলপাইগুড়ি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গজলডোবা ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েছে। তার জেরে ক্রান্তি, ময়নাগুড়ি এবং মালবাজারের কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। তিস্তার জল ঢুকেছে জনপদে। তলিয়ে গিয়েছে কৃষিজমি। সেবক সেতু থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিভিন্ন বাঁধের মুখে ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছে টইটম্বুর তিস্তা নদী। তিস্তার সঙ্গে সঙ্গেই জলঢাকা, করলা নদীর জলও বেড়েছে। পাহাড় এবং সমতলে টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় ছোট-বড় সব নদীতেই জল বেড়েছে।
শনিবার রাত থেকে জলপাইগুড়িতে প্রায় ১১৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, মালবাজারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৬১ মিলিমিটার, ময়নাগুড়িতে ১০৩ মিলিমিটার। টানা বৃষ্টিতে জলপাইগুড়ি শহর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। সেচ দফতর জানিয়েছে, পাহাড়ে বৃষ্টি চলতে থাকায় তিস্তা নদী নিয়ে চিন্তা রয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টি আরও চলবে।
তিস্তার জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ক্রান্তি, ময়নাগুড়িতে অনেক পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। মূলত ব্যারাজ থেকে জল ছাড়তে শুরু করায় জনপদে জল ঢুকতে শুরু করে। রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী তথা মালবাজারের তৃণমূল বিধায়ক দোষারোপ করেছেন সেচ দফতরকে। মন্ত্রীর নালিশ, ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ জল ছাড়ার কথা আগেভাগে না জানানোয় দুর্গতরা প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও পায়নি। প্রতিমন্ত্রী বুলুচিক বরাইক বলেন, “ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাউকে আগাম কিছু না জানিয়ে এভাবে জল ছাড়ার ফলে বারবার ব্লকের একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যার সন্মুখীন হতে হচ্ছে। বাড়িঘরে জল ওঠায় তারা বাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘটনায় আবাদি বেশকিছু আনাজ খেত সহ আমন ধান খেত জলের তলায় ডুবে রয়েছে। প্রশাসন পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।” যদিও ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্ষা কালে যখন-তখন জল ছাড়া হয়। কখন কত জল ছাড়া হচ্ছে তা প্রশাসনকে জানানো হয়। অস্বাভাবিক পরিমাণে জল ছাড়া হলে অতি সতর্কতার সঙ্কেতও দেওয়া হয়। শনিবার রাত থেকে বেশি পরিমাণে জল ছাড়া হলেও তা অস্বাভাবিক নয়। সেচ দফতরের দাবি, বাঁধের মুখের ক্ষতি হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জল কমলে মেরামতিও শুরু হবে।