বিচারপতি শিবজ্ঞানমের অবসর, কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সৌমেন সেন
আনন্দবাজার | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম অবসর নিলেন। তাঁর স্থানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে এলেন বিচারপতি সৌমেন সেন। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে তাঁর নিয়োগের কথা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক।
সোমবারই ছিল হাই কোর্টে বিচারপতি শিবজ্ঞানমের শেষ দিন। তাঁর পরে কলকাতা হাই কোর্টের সবচেয়ে বরিষ্ঠ বিচারপতি সেন। সেই কারণে আপাতত তাঁকেই এই পদে নিয়োগ করা হয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম গত শুক্রবার বিচারপতি সেনকে মেঘালয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি করে পাঠানোর জন্য সুপারিশ করেছিল। তার মধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসাবে বিচারপতি সেনের নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এসেছে কেন্দ্র থেকে। মনে করা হচ্ছে, কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে মেঘালয়ে চলে যেতে হতে পারে বিচারপতি সেনকে। সে ক্ষেত্রে কলকাতা হাই কোর্টের পরবর্তী স্থায়ী প্রধান বিচারপতি কে হবেন, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে।
সোমবার আইন মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় সংবিধানের ২২৩ ধারা অনুযায়ী, ১৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের অবসরের পর কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেনকে ওই হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে নিয়োগ করছেন রাষ্ট্রপতি।’’
সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদ থেকে অবসর নেন বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। বিদায়ী সংবর্ধনা বক্তৃতায় সুপ্রিম কোর্টে পদোন্নতির বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, "আমাকে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। বিদায় নেওয়া সত্যিই কষ্টের, একটু দুঃখও। কিন্তু সব বিচারপতিই জানেন, এক দিন না, এক দিন অবসর নিতেই হবে। এর মধ্যে অনেকে বলেছেন, আমার সঙ্গে কী হতে পারত, কেন তা হল না। কিন্তু এখন সেই সব বিশ্লেষণ করার সময় নয়। আমার কোনও আফসোস নেই, যা হয়, আমি তাই মেনে নিই।”
হাই কোর্টে বিচারপতি সেন পরিচিত নাম। ২০১১ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে তিনি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি পদে রয়েছেন। তাঁর চাকরির মেয়াদ ২০২৭ সালের ২৬ জুলাই পর্যন্ত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচার করেছেন তিনি। তবে এর আগে এক বার প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে শিরোনামে উঠে এসেছিলেন বিচারপতি সেন। মেডিক্যালে ভর্তি সংক্রান্ত সেই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশ খারিজ করে দেয়। পরে ‘ত্রুটি’ উল্লেখ করে ডিভিশন বেঞ্চের সেই নির্দেশও খারিজ করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআইকে তদন্ত চালিয়ে যেতে বলেন। দুই বিচারপতির সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তাতে হস্তক্ষেপ করতে হয় সুপ্রিম কোর্টকে। মেডিক্যালের এই মামলাটি কলকাতা হাই কোর্ট থেকে সরিয়ে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।